আশুলিয়ায় ওসির দুর্নীতির তথ্য চাওয়ায় দুই সংবাদকর্মী নামে চুরি মামলা

By সাভার প্রতিনিধি :

3 Min Read

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দুর্নীতি বিষয়ে তথ্য চাওয়ায় দুই সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধে চুরির মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত সাংবাদিকরা হলেন অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলাদেশ বুলেটিন-এর নিজস্ব প্রতিবেদক ও আশুলিয়া রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আসলাম হাওলাদার সাকিব এবং সকালের সময় পত্রিকার আশুলিয়া প্রতিনিধি সুফি সুমন।

অভিযোগ উঠেছে, কোনো প্রাথমিক তদন্ত ছাড়াই তড়িঘড়ি করে মামলাটি নথিভুক্ত করেছে আশুলিয়া থানা। মামলার বাদী হিসেবে নাম এসেছে আওয়ামী লীগের এক নেত্রী অ্যাডভোকেট নাছরীন আক্তারের।

সূত্র জানায়, সাংবাদিক আসলাম সাকিব ও সুফি সুমন সম্প্রতি ওসি আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের অনুসন্ধান করছিলেন। বিষয়টির সত্যতা পাওয়ার পর ওসির বক্তব্য জানতে চাইলে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি ও চুরির অভিযোগে মামলা করান নাছরীন আক্তারকে ব্যবহার করে থানার ওসি।

মামলার বাদী নাছরীন আক্তার নিজেকে আওয়ামী লীগের নেত্রী ও ঢাকা জেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, তিনি প্রভাব খাটিয়ে সাধারণ মানুষকে ভয় দেখিয়ে জমি দখলসহ নানা অনিয়মে জড়িত। সম্প্রতি বিভিন্ন মিছিল-সমাবেশে দলীয় জনবল ও অর্থ সংগ্রহের কাজ করতেও দেখা গেছে তাকে।

স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ ও নাগরিকদের প্রশ্ন, প্রাথমিক তদন্ত ছাড়াই ওসি কীভাবে এত দ্রুত মামলা নথিভুক্ত করলেন?

সাংবাদিক সুফি সুমন বলেন, আমরা নাছরীন আক্তারের বিরুদ্ধে ভূমি জালিয়াতি ও দখলবাজির বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়েছিলাম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা করেছেন। এটি স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর হামলা।

আসলাম হাওলাদার সাকিব বলেন, এই মামলার বাদীর সঙ্গে আমার কখনো দেখা হয়নি। মামলার তারিখে গত মাসের ১১ তারিখ সকাল ৯টায় আমি বাসায় ঘুমিয়ে ছিলাম। সেদিন সরকারি ছুটি ছিল। আমার মোবাইলের লোকেশন দিলেই সত্যতা প্রমাণ হবে। মূলত আমি ওসির দুর্নীতি নিয়ে অনুসন্ধান করছিলাম বলেই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট নাছরীন আক্তার বলেন, আমি আশুলিয়া থানায় কয়েকটি মামলা করেছি। সাম্প্রতিক মামলার বিষয়ে যেখানে থেকে তথ্য পেয়েছেন, সেখানে থেকেই জানুন।

আশুলিয়া থানার ওসির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তবে তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মো. আজগর হোসেন বলেন, এই বিষয়ে অফিসিয়ালভাবে কিছু বলার অনুমতি নেই।

- Advertisement -

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমি প্রাথমিকভাবে তদন্ত করেছি, কিছু তথ্য সত্য মনে হয়েছে, তাই মামলা নথিভুক্তের নির্দেশ দিয়েছি। নারী বাদী হওয়ায় বিষয়টি সংবেদনশীলভাবে দেখা হয়েছে। আসামিরা সাংবাদিক কিনা, তা আমার জানা নেই।

গত শনিবার (২ নভেম্বর) রাতে আশুলিয়া থানায় নাছরীন আক্তার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন, যেখানে আসামি করা হয়েছে দুই সাংবাদিককে।

newsnextbd20
Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *