ফ্রান্সের বিখ্যাত ল্যুভর জাদুঘরে চুরির ঘটনায় আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। সরকারি কৌঁসুলি জানিয়েছেন, বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজনকে প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করেছে কর্তৃপক্ষ। এর আগে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যারা ইতিমধ্যেই ঘটনার সঙ্গে আংশিক সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন।
ল্যুভর জাদুঘরে চুরির ঘটনাটি ঘটে ১৯ অক্টোবর সকালে। ওইদিন প্রায় ১০২ মিলিয়ন ডলার মূল্যের রত্ন ও অলংকার চুরি হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি। বৃহস্পতিবার ফরাসি রেডিও নেটওয়ার্ক আরটিএলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সরকারি কৌঁসুলি বলেন, এখন পর্যন্ত চুরি হওয়া রত্নগুলো উদ্ধার করা যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত ডিএনএ নমুনার সঙ্গে গ্রেপ্তার এক আসামির ডিএনএ মিল পাওয়া গেছে।
তদন্তের স্বার্থে ফরাসি কর্তৃপক্ষ গ্রেপ্তারকৃতদের নাম ও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ থেকে বিরত রয়েছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, চুরির সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত থাকতে পারে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, চুরি হওয়া রত্নগুলোর মধ্যে রয়েছে তৃতীয় নেপোলিয়নের স্ত্রী সম্রাজ্ঞী ইউজেনির টিয়ারা, যাতে বসানো ছিল ২১২টি মুক্তা, ১ হাজার ৯৯৮টি হীরা ও ৯৯২টি রোজ-কাট হীরা। এছাড়া সম্রাজ্ঞীর অলঙ্কৃত বেল্ট বা কোমরবন্ধনীও চুরি হয়েছে, যাতে ছিল ২,৪৩৮টি হীরা ও ১৯৬টি রোজ-কাট হীরা।
ল্যুভর জাদুঘরে প্রদর্শিত ১৮৫৫ সালের ‘রেলিকুয়ারি ব্রোচ’, যা সম্রাজ্ঞী ইউজেনির ব্যবহৃত বলে জানা যায়, সেটিও নিখোঁজ। একইভাবে উনবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে লুই বোনাপার্টের স্ত্রী রানি হরটেন্স এবং লুই ফিলিপ প্রথমের স্ত্রী রানি মেরি অ্যামেলির ব্যবহৃত হীরাখচিত কানের দুলও চোরেরা নিয়ে গেছে।
২০০৪ সালে ল্যুভরে সংরক্ষিত হয়েছিল নেপোলিয়নের দ্বিতীয় স্ত্রী মেরি লুইসকে বিয়ের উপহার হিসেবে দেওয়া পান্নার গয়নার সেট—যাতে ছিল ৩২টি পান্না ও ১ হাজার ১৩৮টি হীরা। জাদুঘর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই সেটের একটি জোড়া পান্না ও হীরার কানের দুলও চুরি গেছে।
ফরাসি পুলিশ বলছে, এটি সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপের অন্যতম বড় সাংস্কৃতিক সম্পদ চুরির ঘটনা, যার তদন্তে বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে।

