ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিক নির্যাতন, ছাত্রী ছিনিয়ে নেয় মোবাইল

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আন্তঃসেশন ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারির ঘটনায় একাধিক সাংবাদিক শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন। শনিবার (১২ জুলাই) বিকেলে কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে ভিডিও ধারণ করতে গেলে ক্যাম্পাস সাংবাদিক আরিফ বিল্লাহর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী আফসানা পারভীন তিনা। এরপর একদল শিক্ষার্থী তাকে ঘিরে ধরে মারধর করে। একইভাবে ভিডিও ধারণ করতে গেলে নুর ই আলম ও রবিউল আলম নামের আরও দুই সাংবাদিকের ওপরও হামলা চালানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, মারামারির ঘটনাটি চলাকালীন সাংবাদিকেরা দায়িত্ব পালন করতে গেলে অর্থনীতি বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থী দলবেঁধে তাদের ওপর চড়াও হয়। মারধরের পাশাপাশি মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া হয় এবং ভিডিও মুছে ফেলারও চেষ্টা চালানো হয়। তবে ঘটনার পাঁচ ঘণ্টা পার হলেও আরিফ বিল্লাহর ফোন উদ্ধার হয়নি।
ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সংগঠনগুলোর নেতারা, প্রক্টর এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। তারা ঘটনাস্থলে গিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খান। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ ও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।
সাংবাদিকদের অভিযোগ, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় এ ধরনের হামলা শুধু তাদের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে না, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্ত সাংবাদিকতার পরিবেশও বিপন্ন করেছে। তারা দ্রুত মোবাইল ফোন উদ্ধার এবং হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে হামলাকারীরা পাল্টা অভিযোগ তুলে দাবি করছে, তাদের ছাত্রী আফসানাকে সাংবাদিকেরা মারধর করেছে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিতে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক জানিয়েছেন, ছাত্রীটির শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। বরং তিনি আতঙ্কগ্রস্ত ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন এবং পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ্যে এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলা অনভিপ্রেত ও নিন্দনীয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেবে এবং সাংবাদিকদের নিরাপদে কাজ করার পরিবেশ নিশ্চিত করবে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার হয়নি এবং অভিযুক্ত ছাত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন