উন্নয়ন, ন্যায়বিচার ও সম্প্রীতির প্রতিশ্রুতিতে মাঠে বিএনপির আদিবা হোসেন

সৈয়দা আদিবা হোসেন। ছবি - সংগৃহীত।
সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ–বিয়ানীবাজার) আসন ঘিরে শুরু হয়েছে তুমুল রাজনৈতিক উত্তাপ। সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী, সাবেক দুইবারের সংসদ সদস্য ও সিলেট-৬-এর কিংবদন্তি নেতা মরহুম ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন (লেচু মিয়া)-এর কন্যা সৈয়দা আদিবা হোসেন।
স্থানীয় বিএনপি নেতা কর্মীর দাবি তরুণ, শিক্ষিত ও প্রগতিশীল এই নারী বাবার জনপ্রিয়তা ও নিজের রাজনৈতিক কর্মতৎপরতায় হয়ে উঠছেন এ জনপদের নারী নেতৃত্বের নতুন সম্ভাবনা এবং বিএনপির মাঠে নারীর নতুন কণ্ঠ।
ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন ছিলেন দুইবারের সংসদ সদস্য, বিশিষ্ট রাজনীতিক ও শিল্পপতি, যিনি এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে স্থায়ী ছাপ রেখে গেছেন। সেই ঐতিহ্যের উত্তরসূরি হিসেবে রাজনীতিতে এসেছেন কন্যা সৈয়দা আদিবা।
তবে কেবল পারিবারিক পরিচয় নয়, মানুষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ, স্পষ্ট রাজনৈতিক দর্শন এবং উন্নয়ন, ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের পক্ষে দৃঢ় অঙ্গীকারই তার এগিয়ে চলার মূল ভিত্তি। প্রতিদিনই তাকে দেখা যায় কখনো গ্রামের উঠান বৈঠকে, কখনো স্কুল–কলেজে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ে, আবার কখনো বাজারে সাধারণ মানুষের খোঁজখবর নিতে।
বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচি ব্যাখ্যা করার পাশাপাশি তিনি তুলে ধরছেন নিজস্ব উন্নয়ন পরিকল্পনা—যার মধ্যে রয়েছে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা, তরুণদের কর্মসংস্থান, নারী ক্ষমতায়ন এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে তার সভা ও বৈঠকগুলো প্রাণবন্ত হয়ে উঠছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রাবেয়া বেগম বলেন, একজন নারী হিসেবে আদিবা আপা আমাদের সাহস জোগাচ্ছেন। আমরা চাই তিনি এগিয়ে যান এবং নারীদের জন্য কাজ করুন। প্রবীণ ভোটার আসাদ উদ্দিনের ভাষায়, তিনি সৎ, শিক্ষিত ও পরিশ্রমী। এমন নেতৃত্ব পেলে আমাদের এলাকার অনেক উপকার হবে।
গত ১৭ জুলাই লন্ডনের কিংস্টনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সৈয়দা আদিবা। সেখানে তিনি সিলেট-৬ থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তারেক রহমান তাকে জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বজায় রাখা, এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখা এবং দলের রাজনীতিকে আরও গতিশীল করার পরামর্শ দেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এই দিকনির্দেশনা তার মনোবল ও জনগণের জন্য কাজ করার আগ্রহ বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছে।
৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে গোলাপগঞ্জ পৌর বিএনপির সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি বলেন, আমার অঙ্গীকার উন্নয়ন, ন্যায়বিচার এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। প্রতিহিংসার রাজনীতি নয়, চাই রাজনৈতিক ও সামাজিক সম্প্রীতি—যেখানে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত হবে।
নারী ভোটারদের জন্য তিনি কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও নেতৃত্বের সুযোগ বাড়ানোর পরিকল্পনার কথাও জানান। স্থানীয় নারীরা বলছেন, তার উপস্থিতি তাদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সাহস জোগাচ্ছে।
৮ আগস্ট গোলাপগঞ্জ পৌরসভা অডিটরিয়ামে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের উপজেলা শাখার সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, সংগঠনের প্রতিটি নেতাকর্মীকে পাশে নিয়ে আমি মাঠে থাকতে চাই। এই এলাকা ও জনগণের জন্য আমার দরজা সবসময় খোলা থাকবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি হেলালুজ্জামান হেলাল, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামসহ স্থানীয় নেতারা।
গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে তার পরিবারের নামে প্রতিষ্ঠিত পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।
তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, শিক্ষার মান উন্নয়ন, অবকাঠামো আধুনিকায়ন, তরুণ উদ্যোক্তা তৈরির সুযোগ সৃষ্টি এবং প্রবাসী কমিউনিটির সঙ্গে আরও শক্তিশালী যোগাযোগ তৈরির।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নারী নেতৃত্বের উত্থান বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন বার্তা এবং সৈয়দা আদিবা সেই বার্তার প্রতীক। তিনি শুধু বাবার উত্তরাধিকার বহন করছেন না, বরং নিজস্ব দক্ষতা ও প্রগতিশীল চিন্তাধারার মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের কাছে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করছেন।
দুই উপজেলার ভোটারদের মধ্যে এখন প্রশ্ন—গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের নতুন দিন কি আসছে সৈয়দা আদিবা হোসেনের হাত ধরে?
আপনার মতামত লিখুন