খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাছুদের অপসারণে ‘চাপের রাজনীতি’ বরদাশত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে কুয়েট শিক্ষক সমিতি। শিক্ষক নেতারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক অস্থির পরিস্থিতি মূলত ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার প্রেক্ষাপট থেকেই সৃষ্টি হয়েছে এবং এর সঙ্গে শিক্ষকদের অসম্মান ও প্রভাবিত রাজনীতির চক্রান্ত যুক্ত রয়েছে।
২৩ এপ্রিল দুপুরে কুয়েট প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন ও অধ্যাপক ড. আশরাফুল গণি ভূঁইয়া বক্তব্য দেন।
তারা বলেন, কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী পরিকল্পিতভাবে উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে উত্তপ্ত করেছে এবং তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত পর্যন্ত করেছে। এতে শিক্ষক সমাজ গভীরভাবে আহত হয়েছে।
অধ্যাপক আশরাফুল গণি বলেন, উপাচার্যকে গায়ে ধাক্কা দেয়া, ধুতু ফেলা, শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করা এবং রাজনৈতিক ট্যাগ দেয়া কোনো শিক্ষার্থীর কাজ হতে পারে না। এটি সুপরিকল্পিত।
তিনি বলেন, অল্প কয়েকজন মিছিল করলে ‘কুয়েট উত্তাল’ নামে সংবাদ প্রকাশ হচ্ছে। অথচ এখানে পাঁচ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে, যারা নিঃশব্দে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে চায়।
শিক্ষা উপদেষ্টা একপাক্ষিকভাবে কেবল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষক নেতারা। তাদের মতে, বিষয়টি অসম্মানজনক এবং তা সমাধান প্রক্রিয়াকে জটিল করে তুলছে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল-যুবদল সংশ্লিষ্ট ছাত্রদের সঙ্গে কুয়েট শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এতে অর্ধশতাধিক আহত হন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২৫ ফেব্রুয়ারি একাডেমিক কার্যক্রম ও আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে।
১৩ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে আন্দোলন শুরু করে এবং ১৪ এপ্রিল রাতের সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করে।
শিক্ষক নেতারা শিক্ষার্থীদের প্রতি সহনশীল আচরণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় রাজনৈতিক মাঠ নয়। এখানে জ্ঞান, শৃঙ্খলা ও সম্মান বজায় রাখাই শিক্ষার্থীর পরিচয়।
তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এই ধরনের চলমান সংকট কুয়েটের শিক্ষা পরিবেশকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং এর দায়ভার বহন করতে হবে সবাইকে।

