ছাত্রদল নেতা সাম্য হত্যা: রাজনৈতিক কারণের ইঙ্গিত রিজভীর, তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মনে করছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সাম্য হত্যার প্রতিবাদে উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম আয়োজিত মানববন্ধনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
রিজভী বলেন, “সাম্য এফ রহমান হল ছাত্রদলের সম্পাদকীয় পদে ছিল। তাকে কেন হত্যা করা হলো? ভবঘুরেদের গ্রেপ্তার দেখানো হলেও আমরা মনে করি এর পেছনে রাজনৈতিক কারণ থাকতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, কয়েকদিন আগে সাম্য জাতীয় সংগীত বন্ধের দাবির বিরোধিতা করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিল। “জাতীয় সংগীতের পক্ষে অবস্থান নেওয়াই কি তার মৃত্যুর কারণ?”
সাম্য হত্যাকাণ্ডের ধরণ তুলে ধরে রিজভী আবরার ফাহাদের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। বলেন, “আবরার প্রতিবাদী পোস্ট দেওয়ায় শহীদ হয়েছিলেন। আজকেও যারা জাতীয় পতাকা, সংগীত ও স্বাধীনতার পক্ষে- তাদের প্রাণ যাচ্ছে।”
তিনি প্রশ্ন রাখেন, “ক্যাম্পাসে এখনও কেন লাশ পড়ছে? এখন তো আওয়ামী লীগ নেই, যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়েছে তারা ক্ষমতায়। এরপরও কেন রক্ত ঝরছে?”
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মঙ্গলবার রাতে খুন হন সাম্য। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন।
রিজভী অভিযোগ করেন, “ভবঘুরেদের গ্রেপ্তার দেখানো হলেও হত্যার সঙ্গে জড়িত রাজনৈতিক শত্রুদের আভাস আমরা পেয়েছি। তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে, না হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “পুলিশ ভবঘুরেদের ধরেছে। কিন্তু মানুষ এভাবে সহজভাবে নেয় না। আবরার হত্যাকাণ্ডেও আমরা দেখেছি, সত্য অনুসন্ধানে ব্যর্থ হয়েছিল পুলিশ।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দিকেও প্রশ্ন ছুড়ে দেন রিজভী। বলেন, “যারা ক্ষমতায়, তাদের প্রতি আমরা আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনার আচরণে দ্বিচারিতা স্পষ্ট। একদিকে আওয়ামী বিরোধীদেরকে স্বাগত জানানো হচ্ছে, অন্যদিকে ছাত্রদের ওপর লাঠিচার্জ।”
তিনি সরকারকে সতর্ক করে বলেন, “ডানে-বামে তাকিয়ে দেশ পরিচালনা করুন। কোনো বিশেষ গোষ্ঠীকে প্রতিষ্ঠা করতে গেলে জনগণ আপনাদের আসল চেহারা ধরে ফেলবে।”
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরামের নেতৃবৃন্দসহ অনেকে।
আপনার মতামত লিখুন