ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৪০৩ জন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নোটিশে বলা হয়েছে, সাত কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব না পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একতরফা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাদের ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে, তাদের সনদ বাতিলেরও সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ।
মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। এতে বলা হয়, গত ২ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও জুলাই আন্দোলনে সংঘটিত সহিংস ঘটনার তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদের স্বাক্ষরে নোটিশটি জারি করা হয়।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সংঘটিত বেআইনি ও সহিংস ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে তথ্যানুসন্ধান কমিটি ১২৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে। পরবর্তীতে গঠিত তদন্ত কমিটির দ্বিতীয় সভায় আরও ২৭৫ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, ফলে মোট ৪০৩ জন শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত করা হয়।
নোটিশে অভিযুক্তদের উদ্দেশে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, তা সাত কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে হবে। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী একতরফা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তালিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, এতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ প্রায় সব হলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম অন্তর্ভুক্ত আছে।
তাদের মধ্যে রয়েছেন—স্যার এ. এফ. রহমান হলের রিয়াজুল ইসলাম ও মুনেম শাহরিয়ার মুন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের আযহারুল ইসলাম মামুন, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের কামাল উদ্দিন রানা ও মিশাত সরকার, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের শহিদুল হক শিশির ও মোহাম্মদ হোসেন, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের তানভীর শিকদার, বিজয় একাত্তর হলের সজীবুর রহমান ও আবু ইউনুস, জগন্নাথ হলের কাজল দাস ও অতনু বর্মণ, সূর্যসেন হলের মারিয়াম জামান খান সোহান ও সিয়াম রহমান, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের জাহিদুল ইসলাম ও শরীফ আহমেদ মুনিম, অমর একুশে হলের এনায়েত এইচ মনন ও ইমদাদুল হক সোহাগ, ফজলুল হক মুসলিম হলের আনোয়ার হোসেন নাঈম ও আবু হাসিব মুক্তর।
ছাত্রী হলের মধ্যে রয়েছেন—রোকেয়া হলের অন্তরা দাস পৃথা ও আতিকা বিনতে হোসাইন, শামসুন নাহার হলের খাদিজা আক্তার উর্মি ও নুসরাত রুবাইয়াত নীলা, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের কোহিনূর আক্তার রাখি ও সানজিনা ইয়াসমিন, বেগম সুফিয়া কামাল হলের পূজা কর্মকার ও রিমা আক্তার ডলি, এবং কুয়েত মৈত্রী হলের রাজিয়া সুলতানা কথা ও জান্নাতুল হাওয়া আঁখি।
তবে তালিকায় জিয়াউর রহমান হলের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল ইসলাম শান্তর নাম নেই। অন্যদিকে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভার নাম এতে যুক্ত আছে।
এ বিষয়ে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, যাদের ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে, তাদের সনদ বাতিলের সুপারিশ করা হবে। এ বিষয়ে সিন্ডিকেটে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, নোটিশটি মঙ্গলবার থেকেই কার্যকর হয়েছে।

