তানজিদ হাসান তামিমের একার লড়াইও শেষ রক্ষা করতে পারেনি। ব্যাটিং ব্যর্থতার পর ফিল্ডিংয়েও ধস নামল বাংলাদেশ দলের। একের পর এক ক্যাচ মিস আর অব্যবস্থাপনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর সুযোগও হাতছাড়া করল লিটন দাসের দল। সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে ৫ উইকেটে হেরে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ শেষ করেছে বাংলাদেশ। ১৫২ রানের টার্গেট তাড়া করে ১৯ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় ক্যারিবীয়রা।
শুরুর দিকেই বোলাররা ম্যাচে ফেরার সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু ফিল্ডারদের ব্যর্থতা সব শেষ করে দেয়। দ্বিতীয় ওভারেই শরিফুল ইসলামের বলে ওপেনার আমির জাঙ্গুর ক্যাচ ছাড়েন সাইফ হাসান। এরপর মেহেদী হাসান ফেরান অ্যালিক অ্যাথানেজকে (১)। চতুর্থ ওভারে আবারও শরিফুলের বলে জাঙ্গুর (৯) সহজ ক্যাচ মিস করে বাংলাদেশ। ষষ্ঠ ওভারে নাসুম আহমেদ ব্রেন্ডন কিংকে (৮) বোল্ড করে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন। তবে জীবন পাওয়া জাঙ্গু রিশাদের বলে আউট হওয়ার আগে ২৩ বলে ৩৪ রান করে যান।
এরপর মাঠে নামে আরও বিপর্যয়। উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান গোড়ালির চোটে পড়ে স্ট্রেচারে মাঠ ছাড়েন। বদলি ফিল্ডার তানজিম হাসান সাকিব ২৭ রানে থাকা আকিম অগাস্টের ক্যাচ ফেলে দিলে ম্যাচ পুরোপুরি হাতছাড়া হয়ে যায়। জীবন পেয়ে ২৪ বলে ফিফটি করেন অগাস্ট। অপর প্রান্তে রোস্টন চেজও ২৯ বলে ফিফটি ছুঁলে ম্যাচ একতরফা হয়ে পড়ে। রিশাদ এক ওভারেই চেজ ও অগাস্টকে ফেরালেও ততক্ষণে জয় অনেক দূরে সরে গেছে। শেষ পর্যন্ত ১৬.৫ ওভারে ৫ উইকেটে সহজ জয় তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশের হয়ে রিশাদ নেন ৩টি উইকেট, নাসুম ও মেহেদী একটি করে।
এর আগে টসে জিতে চারটি পরিবর্তন এনে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু আগের মতোই ব্যাটিং ব্যর্থতা পিছু ছাড়েনি। একাই লড়েছেন তানজিদ হাসান তামিম। শুরুতেই ইমন (৯) ও লিটন (৬) ব্যর্থ হন। এরপর সাইফ হাসানকে (২৩) সঙ্গে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে ৬৩ রানের জুটি গড়েন তানজিদ। ৩৬ বলে ফিফটি করা তানজিদ ৪২ ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম ১,০০০ টি-টোয়েন্টি রান পূর্ণ করেন।
কিন্তু একপ্রান্তে স্থির থাকলেও অন্য প্রান্তে চলতে থাকে উইকেটের মিছিল। ১৬তম ওভারের শেষ বল থেকে ১৯তম ওভারের শেষ বল পর্যন্ত টানা চার ওভারে একেক বলে একেক উইকেট হারায় বাংলাদেশ— রিশাদ (৩), সোহান (১), নাসুম (১) ও জাকের আলী অনিক (৫) সাজঘরে ফেরেন। সেঞ্চুরির পথে থাকা তানজিদ শেষ ওভারের প্রথম বলেই আউট হন রোমারিও শেফার্ডের বলে। ৬২ বলে ৯ চার ও ৪ ছক্কায় করেন ৮৯ রান। তাসকিনের শেষের দিকে ৪ বলে ৯ রানে এক ছক্কায় দলকে ১৫১ রানে পৌঁছাতে সাহায্য করেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সবচেয়ে সফল ছিলেন রোমারিও শেফার্ড টি-টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিকসহ ৩ উইকেট নেন তিনি। স্পিনার পিয়েরে ও হোল্ডার নেন ২টি করে উইকেট, আর আকিল হোসেন ও রোস্টন চেজ ১টি করে।
শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য আবারও একই পরিণতি ব্যাটিং ব্যর্থতা, ফিল্ডিং বিপর্যয় আর ধারাবাহিক হারের লজ্জা।

