সাভারে ‘চোর সন্দেহে’ যুবককে গাছে বেঁধে তিন ঘণ্টা ধরে নির্যাতন

সাভারে ‘চোর সন্দেহে’ অভিজিৎ দে (৩৪) নামের এক যুবককে গাছে বেঁধে তিন ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করেছেন একদল যুবক। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

শনিবার (১৭ মে) বিকেল ৫টার দিকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজনরা প্রথমে ওই যুবককে চোর সন্দেহে মারধর শুরু করেন। এরপর তাকে স্থানীয় আরও ২০-২৫ জন যুবকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তারা তাকে রাস্তার পাশের একটি মেহগনি গাছে বেঁধে দফায় দফায় মারধর করেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, নির্যাতনের একপর্যায়ে তার শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়া হয় এবং পরনের লুঙ্গিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।

রাত ৮টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিজিৎকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। তার বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার সুলতানপুর গ্রামে। বাবার নাম কমল কান্তি দে।

পুলিশ জানায়, অভিজিৎ নিজের নাম-ঠিকানা বলতে পারলেও তার আচরণ স্বাভাবিক নয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন। স্থানীয় দোকানিরাও জানিয়েছেন, অভিজিৎ বেশ কিছুদিন ধরে থানার পাশে, ডাকবাংলো চত্বর ও হাসপাতালের আশপাশে ঘোরাফেরা করছিলেন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজন জানান, শুক্রবার রাতে বৃষ্টির সময় ওই যুবক আশ্রয় নিতে হাসপাতালে প্রবেশ করেন। পরে খাবারের খোঁজে দ্বিতীয় তলায় গেলে তাকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরদিন বিকেলে তিনি আবারও হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় উঠলে এক ব্যক্তি তাকে চোর সন্দেহে মারধর শুরু করেন। এরপর আরও কয়েকজন যুবক তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে গাছে বেঁধে নির্যাতন চালান।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুয়েল মিয়া বলেন, প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে নির্যাতনের ঘটনাটি চললেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে কিছু জানায়নি।

পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) চম্পক বড়ুয়া বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজন যুবককে থানায় আনা হয়েছে।

হাসপাতালে দায়িত্বে থাকা ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার (ইএমও) ডা. আবিদুর রহমান বলেন, বিষয়টি কেউ আমাদের জানায়নি। সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদ আল হাসান বলেন, ইএমও’র দায়িত্ব ছিল তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে অবহিত করা। এমনকি আমাকেও জানানো হয়নি। খোঁজ-খবর নিয়ে গাফিলতি প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।