সীমান্তে সক্রিয় পাচারকারী সিন্ডিকেট

3 Min Read

জাফর আলম, কক্সবাজার ব্যুরো:

মিয়ানমার সীমান্ত থেকে অবৈধভাবে গরু আসছে বাংলাদেশে। এইসব অবৈধ পশু এপারে নিয়ে এসে ভুয়া রশিদ বানিয়ে গাড়িভর্তি সরবরাহ করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।সূত্র জানায়, মিয়ানমার থেকে প্রতিদিন গড়ে এক হাজারটি গরু নিয়ে আসছে চোরাকারবারিরা। এতে প্রতিদিন পাঁচ লাখ টাকা করে প্রতিমাসে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে সরকারকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকার তুমব্রু ছাড়াও কচ্ছপিয়া এবং গর্জনিয়া এবং আলীকদমের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমার থেকে প্রবেশ করানো হচ্ছে শত শত গরু ও মহিষ। দুই উপজেলার এই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট গত এক বছরে অঢেল টাকার মালিক বনে গেছেন।এই চক্র এতটাই শক্তিশালী যে, তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপরও হামলা চালাতে দ্বিধা করে না।

এমনই এক ঘটনায় গত বছরের এপ্রিল মাসে ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি। ইতোপূর্বে সীমান্তের ওপার থেকে প্রতিদিন গরু আসছে জেনেও অনেক সময় না দেখার ভান করে থাকেন কিছু কর্মচারী। সম্প্রতি ৫ আগস্টে সরকার পতন হলে রশিদ নগর এলাকা হয়ে সড়ক পথে বিভিন্ন উপায়ে অবৈধ গরু আসছে দেখে কিছু সুবিধাবাদী সন্ত্রাসীচক্র তাদের আটকে দেয়।প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করে তাদের গরু কারবারটি নিয়মিত চালু রাখার ব্যবস্থা করে দেয় বলে খবর পাওয়া গেছে।

তবে এ ব্যপারে কিছুই জানেন না বলে জানান রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম। জানা গেছে, সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে আনা গরু প্রথমে কচ্ছপিয়া, উখিয়ার ঘোনা গর্জনিয়া বড়বিল, ক্যাজরবিল, জোয়ারিয়ানালা রশিদ নগর বিভিন্ন জায়গায় মজুত করে পরবর্তী দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

সীমান্ত এলাকা ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গরু কারবারে সরাসরি জড়িত এলাকার সন্ত্রাসীরা। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির কম্বনিয়া, ভালোবাসা, তুমব্রু, বামহাতিরছড়া, ফুলতলী, চাকঢালা, লম্বাশিয়া, ভাল্লুকখাইয়া, দৌছড়ি, বাইশফাঁড়ি, আশারতলী, জামছড়ি এবং রামুর হাজিরপাড়া ও মৌলভীরকাটা দিয়ে চোরাই পথে মিয়ানমারের গরু আসছে।

সীমান্ত এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, চিহ্নিত ১৫ ব্যক্তির নেতৃত্বে দুই শতাধিক চোরাকারবারি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা ওপার থেকে গরু আনছে প্রতিরাতে।

ট্রাকযোগে এসব গরু পৌঁছে যাচ্ছে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, এখানকার কিছু লোকের সহায়তায় বেশিরভাগ টাঙ্গাইল ভোয়াপুরের শাহিন, বি.বাড়িয়ার সেন্টুমিয়া এই দুইজনকে গরু চোরাচালানে সহায়তা করছে জোয়ারিয়ানালার শাকিল নামের একজন।

সীমান্ত এলাকায় গরু চোরাচালানি গডফাদার হিসেবে যাদের নাম শোনা গেছে তারা হলেন, চাকমারকুলের আবু তাহের, উখিয়ার কিং খ্যাত জয়নাল, ঈদগাঁও এলাকার আমান খুশবো ও রমজান, চকরিয়ার বাবুল ও আব্দুরহিম, টাঙ্গাইল ভোয়াপুর এলাকার মোহাম্মদ আলম, হারুন, খোকন, টেকনাফের আমিন, শামলাপুরের মনছুর, ঘুমধুমের মিজান ও কুমিল্লার মিজানের নাম উঠে এসেছে।

- Advertisement -

এরা সরাসরি মিয়ানমার সীমান্তে গিয়ে সেখানকার লোকদের সঙ্গে কথা বলে গরু ক্রয় করে স্থানীয় জোয়ারিয়ানালা, কচ্ছপিয়া, রশিদ নগর, গর্জনিয়া, কাউয়ারখোপ এলাকার অস্ত্রধারী কিছু সন্ত্রাসীর মাধ্যমে সীমানা পার করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে।

newsnextbd20
Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *