সীমান্ত সংঘর্ষে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ায় ৩২ জন নিহত

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশ: ২৬ জুলাই, ২০২৫, ৫:৩২
সীমান্ত সংঘর্ষে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ায় ৩২ জন নিহত

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যকার সীমান্ত বিরোধে নতুন করে আরও ১২ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে কম্বোডিয়ার কর্মকর্তারা। এ নিয়ে দুই দেশের সংঘর্ষে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২ জনে। এতে করে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতের আশঙ্কা বাড়ছে।

শনিবার কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মালি সোকচেতা জানান, সাম্প্রতিক হামলায় সাতজন বেসামরিক নাগরিক ও পাঁচজন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার থাই বাহিনীর রকেট হামলায় একটি বৌদ্ধ প্যাগোডায় আশ্রয় নেওয়া এক কম্বোডিয়ান নাগরিকের মৃত্যু হয়।

তিনি আরও জানান, কমপক্ষে ৫০ জন বেসামরিক নাগরিক ও ২০ জনের বেশি সেনা আহত হয়েছেন।

এদিকে থাইল্যান্ড জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সংঘর্ষে তাদের ১৩ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ছয়জন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৩০ জন বেসামরিক ও ২৯ জন সেনা সদস্য।

কম্বোডিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম খমের টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির প্রিঅ্যাহ ভিহেয়ার প্রদেশ থেকে অন্তত ২০ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অপরদিকে থাইল্যান্ড জানিয়েছে, তাদের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলো থেকে ইতোমধ্যে এক লাখ ৩৮ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। গঠন করা হয়েছে প্রায় ৩০০টি আশ্রয়কেন্দ্র। সেইসঙ্গে সীমান্তবর্তী আটটি জেলায় জারি করা হয়েছে সামরিক শাসন।

দীর্ঘদিনের পুরোনো সীমান্ত বিরোধ বৃহস্পতিবার ফের চরমে পৌঁছে, যখন একটি ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে পাঁচজন থাই সেনা আহত হন। এর পরপরই উভয় পক্ষ পরস্পরের ভূখণ্ডে সরাসরি হামলা চালায় এবং একে অপরকে প্রথম হামলার জন্য দায়ী করে।

থাই সেনাবাহিনীর দাবি, কম্বোডিয়ান বাহিনী তাদের বেসামরিক স্থাপনায় দূরপাল্লার রকেট হামলা চালায়, যার একটি পেট্রোল স্টেশনে হামলায় ছয়জন নিহত হন। জবাবে থাই বিমানবাহিনী একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান থেকে কম্বোডিয়ার বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে বোমা হামলা চালায়, যার মধ্যে একটি বৌদ্ধ প্যাগোডাও ছিল।

কম্বোডিয়া অভিযোগ করেছে, থাইল্যান্ড সংঘর্ষে ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করেছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই বলেছেন, বেসামরিক প্রাণহানি এবং একটি হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হতে পারে।

শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি) নিউইয়র্কে এ সংঘর্ষ নিয়ে জরুরি বৈঠক করে। যদিও আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি, তবে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, বৈঠকে সব ১৫ সদস্য দেশই উভয় পক্ষকে যুদ্ধবিরতি বজায় রাখা, সংযম প্রদর্শন এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছে।