‘অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন’ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ

দেশে করোনাভাইরাসের নতুন করে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় গর্ভবতী নারী, জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং কোভিড রোগীদের সংস্পর্শে আসার ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বুধবার (১১ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর জানান, বর্তমানে সরকারের হাতে রয়েছে ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৯০০ ডোজ টিকা, যা দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকাদান চলবে।
তিনি বলেন, “যারা এখনো টিকা নেননি, বিশেষ করে ইমিউনো-কম্প্রোমাইজড ব্যক্তি, গর্ভবতী নারী এবং যারা কোভিড আক্রান্তদের সংস্পর্শে কাজ করেন—তাদের অবশ্যই টিকা নিতে হবে। এছাড়া ষাটোর্ধ্ব ও বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের ছয় মাস পর বুস্টার ডোজ দেওয়া উচিত।”
কোভিড টিকা এখনো নির্ধারিত কেন্দ্রগুলোতে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। এ সময় টিকার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ডা. হালিমুর রশীদ বলেন, “য虽然 বাংলাদেশে আপাতত নতুন ওমিক্রন-নির্দিষ্ট টিকা নেই, তবুও পুরোনো টিকাগুলো ডব্লিউএইচও নির্দেশনা অনুযায়ী সংক্রমণের তীব্রতা কমাতে কার্যকর।”
এছাড়া কোভিড পরীক্ষা প্রসঙ্গে মহাপরিচালক জানান, সাধারণ মানুষের পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। তবে উপসর্গ থাকলে হাসপাতালে পরীক্ষা করানো যেতে পারে। বর্তমানে আরটি-পিসিআর কিট সরবরাহের কাজ চলছে, এবং ঈদের পর সব হাসপাতালে পরীক্ষার সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইতোমধ্যে ২৮ হাজার দ্রুত শনাক্তকরণ কিট পেয়েছে এবং আরও ১০ হাজার আরটি-পিসিআর কিট আসছে বলে জানান তিনি।
এছাড়া জেলা পর্যায়ে হাসপাতালগুলোতে কোভিড রোগীদের জন্য শয্যা প্রস্তুত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইতোমধ্যেই শয্যা প্রস্তুত আছে। আগামী শনিবারের মধ্যে দেশের প্রতিটি জেলা হাসপাতালে শয্যা প্রস্তুত থাকবে বলে জানিয়েছেন পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান।
তিনি বলেন, “দেশের কোনো সরকারি হাসপাতালে রোগী এলে যেন বিনা চিকিৎসায় ফেরত না যেতে হয়, সেটিই আমাদের প্রধান অঙ্গীকার।”
এ বছর এখন পর্যন্ত দেশে ২২৫ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৫৭ জনই জুনের প্রথম ১১ দিনে আক্রান্ত। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছে ১০ জন, এবং এ বছর করোনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী ও প্রতিবেশী দেশে নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ভারতসহ ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ পরিহারের পাশাপাশি স্থল ও বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং জোরদার করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন