আলাস্কা বৈঠক: যুদ্ধবিরতি নয়, বাড়ল অনিশ্চয়তা

সারা বিশ্বের দৃষ্টি ছিল আলাস্কার অ্যাঙ্করেজে ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকে। অনেকের আশা ছিল ইউক্রেইন যুদ্ধে আসবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা, আবার আশঙ্কাও ছিল কিইভের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে কোনো ‘অন্যায্য’ চুক্তি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই হয়নি। প্রায় তিন ঘণ্টার আলোচনার পর দুই নেতা যৌথ সংবাদ সম্মেলনে হাজির হলেও সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন নেননি। ট্রাম্প শুধু স্বীকার করেছেন, সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
নিজেকে সবসময় ‘চুক্তিকারী’ ও ‘শান্তির দূত’ হিসেবে তুলে ধরতে চান ট্রাম্প, কিন্তু এবার খালি হাতে ফিরেছেন। ইউরোপীয় মিত্ররা হয়তো এটিকে স্বস্তি হিসেবে দেখবে, তবে যুক্তরাষ্ট্রে তার ভাবমূর্তিতে আঘাত লেগেছে। অন্যদিকে, পুতিন ছিলেন আত্মবিশ্বাসী ও প্রভাবশালী। বৈঠকের শুরুতেই সংবাদ সম্মেলনে তিনি নেতৃত্ব দেন, ট্রাম্পকে নীরব থাকতে হয় পাশে। মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতেও তাকে স্বচ্ছন্দ দেখিয়েছে, যেন তিনি ঘরেরই মানুষ। এতে স্পষ্ট যে রাশিয়াকে একঘরে করার পশ্চিমা প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
কিইভ আপাতত স্বস্তি পেয়েছে, কারণ কোনো চুক্তি চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। তবে ভয়ও কম নয়। পুতিন জানিয়ে দিয়েছেন, সংঘাতের মূল কারণ সমাধান না হলে স্থায়ী শান্তি সম্ভব নয়। অর্থাৎ ইউক্রেইনের সামরিক শক্তি কমানো, নেটোয় যোগ দেওয়া ঠেকানো এবং দখলকৃত এলাকা ছাড়তে অস্বীকৃতি—এসব লক্ষ্য থেকে রাশিয়া সরে আসছে না।
যুদ্ধবিরতি ব্যর্থ হওয়ার পর ট্রাম্প নতুন নিষেধাজ্ঞার ইঙ্গিত দিয়েছেন, যদিও বলেছেন এ বিষয়ে ভাবতে আরও দুই-তিন সপ্তাহ লাগবে। এই অস্পষ্ট বার্তা অনিশ্চয়তা আরও বাড়িয়েছে। শেষ পর্যন্ত আলোচনার টেবিল থেকে কোনো নতুন দিকনির্দেশনা না আসায় অ্যাঙ্করেজ বৈঠক ইতিহাসে নথিভুক্ত হলো এক অপূর্ণ প্রত্যাশা ও অনিশ্চয়তার বৈঠক হিসেবে।
আপনার মতামত লিখুন