দেবিদ্বারে আওয়ামী লীগ নেতার ভাই স্কুল সভাপতি, বিএনপির ক্ষোভ

কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বড় শালঘর ইউএমএ উচ্চ বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি পদে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার ভাই মাসুদুর রহমানকে মনোনয়ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র সমালোচনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় অভিভাবক, শিক্ষক ও রাজনৈতিক মহলের একাংশ এ সিদ্ধান্তকে পক্ষপাতদুষ্ট ও বিতর্কিত বলে মনে করছেন।
জানা গেছে, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল আওয়ালের ছোট ভাই মাসুদুর রহমানকে বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের মতে, মাসুদুর রহমান এর আগেও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্য, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক অপব্যবহারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মাসুদুর রহমান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মিলে আন্দোলন দমন ও বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগে বিতর্কিত হন। সেই মাসুদুর রহমানকেই এবার বিএনপির কিছু নেতার সহযোগিতায় স্কুল কমিটির সভাপতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বিএনপি নেতা বলেন, বেলজিয়াম বিএনপির সভাপতি সাইদুর রহমান লিটন আওয়ামী লীগ ঘেঁষা লোকদের টেনে এনে কমিটিতে বসাচ্ছেন। এটা শুধু রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র নয়, বরং দলের আদর্শিক নেতাকর্মীদের জন্য অপমানজনক।
তিনি আরও জানান, দলীয় হাইকম্যান্ড যেন এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে—এই প্রত্যাশা করছি।
আরও জানা গেছে, মাসুদুর রহমান এর আগে তার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সৈয়দপুর কামিল মাদ্রাসায় এক দুর্নীতিবাজ শিক্ষককে নিয়োগ দিতে চেয়েছিলেন। তবে মাদ্রাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ তা প্রত্যাখ্যান করেন।
অন্যদিকে মাসুদুর রহমানের পক্ষে থাকা একটি শিক্ষক দল দাবি করেছে, কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ম মেনেই হয়েছে এবং এটি কোনো রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, বরং সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে গৃহীত হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু ইউসুফ জানান, আমি কোনো ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করিনি। কমিটির প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে জমা দেওয়া হয় এবং সেখান থেকে মাসুদুর রহমান সভাপতি নির্বাচিত হন।
এদিকে স্থানীয় বিএনপির সহ-সভাপতি মো. জাকির হোসেন জানান, তিনিই সভাপতি পদের প্রথম প্রার্থী ছিলেন এবং তার নাম ইউএনও মারফত জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু পরবর্তীতে জেলা শিক্ষা অফিস থেকে পাঠানো চিঠিতে মাসুদুর রহমানের নাম প্রথম স্থানে চলে আসে। এতে হতাশ হন তিনি। তার ভাষায়, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে পুরো বোর্ডের অনুমোদন প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যায়, যা প্রশ্নবিদ্ধ।
আপনার মতামত লিখুন