ইসলামী ব্যাংকের এমডি মুনিরুল মওলাকে অপসারণ

ছুটিতে থাকা ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে অবশেষে অপসারণ করা হয়েছে। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ তাঁর অপসারণের সিদ্ধান্ত নিলেও তা কার্যকর করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তির প্রয়োজন ছিল। গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সেই অনাপত্তি দেওয়া হয়।
তবে এই সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হচ্ছে না। মুনিরুল মওলা আগামী এক মাস পর্যন্ত এমডি হিসেবে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন। উল্লেখ্য, এর আগে গত ৬ এপ্রিল তাঁকে তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠায় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, মুনিরুল মওলার বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ার পর তাঁর অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্র ইতিমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) পাঠানো হয়েছে। কমিশন এখন বিধি অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
মুনিরুল মওলার বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর ফোন বন্ধ ছিল।
২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় ইসলামী ব্যাংক দখল নেয় চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। এরপর থেকেই ব্যাংকটি থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ বিভিন্ন কোম্পানির নামে বের করে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এ সময় ব্যাংকটি থেকে প্রায় ৯১ হাজার কোটি টাকা বের করে নেওয়া হয়, যার বড় একটি অংশ অনুমোদিত ঋণের নামে বিতরণ করা হয়।
এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরই মুনিরুল মওলাকে এমডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। উভয়ের বাড়ি চট্টগ্রামে হওয়ায় তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের অধিকাংশ সদস্য এবং বেশ কয়েকজন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) আত্মগোপনে চলে যান। সে সময় ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন এস আলমের ছেলে আহসানুল আলম। যদিও মুনিরুল মওলা তখনও বহাল ছিলেন। পরবর্তীতে ব্যাংকের ভেতরে অসন্তোষ ও কর্মকর্তাদের চাপের মুখে তাঁকে ছুটিতে পাঠানো হয়।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ইসলামী ব্যাংকের প্রকৃত খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ৭১৬ কোটি টাকায়, যা ব্যাংকটির বিতরণ করা মোট ঋণের ৪২ দশমিক ২২ শতাংশ।
আপনার মতামত লিখুন