উত্তর বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ, তিন নম্বর সতর্কসংকেত

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছে এবং চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। শুক্রবার ভোর ৬টায় নিম্নচাপটি উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছিল এবং বিকেলের দিকে এটি উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা জানান, নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং এর প্রভাবে দেশের অধিকাংশ এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে, যা জুলাই মাসের শেষ দিনগুলোতেও অব্যাহত থাকতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে এবং এটি বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে।
খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু স্থানে মাঝারি থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনাও রয়েছে।
অতি ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ির পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধ্বসের আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কিছু এলাকায় অস্থায়ী জলাবদ্ধতাও দেখা দিতে পারে।
নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রভাবে সাগর বেশ উত্তাল রয়েছে।
অমাবস্যা এবং নিম্নচাপের যৌথ প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং এসব জেলার কাছাকাছি দ্বীপ ও চরাঞ্চলে ১ থেকে ৩ ফুট উচ্চতার বায়ু-চালিত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে নির্দেশ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
নদীবন্দরগুলোর জন্যও সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নৌবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে এবং সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। ঢাকায় আজ সকাল ৬টায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার।
আপনার মতামত লিখুন