কক্সবাজারে অস্ত্র কারবারিদের নেটওয়ার্ক, বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্রসহ আটক ৩

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দুর্বৃত্ত চক্র থেকে সংগৃহীত অস্ত্রের চালানসহ তিনজন চিহ্নিত অস্ত্র ব্যবসায়ীকে আটক করেছে র্যাব। এ সময় একটি বিদেশি অটোমেটিক রাইফেল, ৬১ রাউন্ড গুলি, ৮টি পিস্তলের গুলি এবং একটি ইজিবাইক জব্দ করা হয়।
শুক্রবার (৫ জুলাই) সকালে কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ কলাতলী এলাকায় র্যাব-১৫ এর একটি বিশেষ দল এ অভিযান চালায়। বিষয়টি বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করেন র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) ও সহকারী পুলিশ সুপার আ. ম. ফারুক।
আটককৃতরা হলেন—মহেশখালী উপজেলার বড়মহেশখালী ইউনিয়নের মাঝেরডেইল এলাকার আনজু মিয়ার ছেলে শাহ আলম (৪০), একই ইউনিয়নের দেবাঙ্গপাড়া এলাকার আব্দুল লতিফের ছেলে মো. আদিল ওরফে আদিল্ল্যা (৩৫) এবং উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের মাদারবুনিয়া এলাকার আইয়ুব আলীর ছেলে আব্দুল জলিল (২৯)।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারে—দক্ষিণ কলাতলীতে অস্ত্রের একটি চালান অন্যত্র সরানোর প্রস্তুতি চলছে। পরে অভিযানে গেলে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনজন ব্যক্তি একটি ইজিবাইক ফেলে পালানোর চেষ্টা করেন। ধাওয়া দিয়ে তাদের আটক করা হয়। ইজিবাইকটি তল্লাশি করে বস্তার ভেতর পাওয়া যায় ১টি বিদেশি রাইফেল, ৬১ রাউন্ড গুলি, পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি এবং কয়েকটি মোবাইল।
সহকারী পুলিশ সুপার ফারুক জানান, আটক শাহ আলম রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি দুর্বৃত্ত চক্র থেকে অস্ত্রের চালান সংগ্রহ করেন এবং বিকাশের মাধ্যমে চালান পরিবহনের জন্য ইজিবাইকচালক আব্দুল জলিলকে টাকা পাঠান। পরে জলিল নিজের গাড়িতে চালানটি কক্সবাজার নিয়ে আসছিলেন, যেখানে তা হস্তান্তর করার কথা ছিল শাহ আলম ও আদিলের কাছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, এই চক্র দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তাদের বিরুদ্ধে পূর্বেও মাদক, অস্ত্র ও সহিংসতার একাধিক মামলা রয়েছে।
র্যাব আশঙ্কা করছে, এই চক্রের সঙ্গে একটি বৃহৎ অস্ত্রপাচার নেটওয়ার্ক যুক্ত রয়েছে, যার অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।
অপরাধ বিশ্লেষকদের মতে, কক্সবাজারে বিদেশি অস্ত্রের সহজপ্রাপ্তি অপরাধ প্রবণতাকে ভয়াবহ রূপ দিয়েছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্প, সীমান্তবর্তী অঞ্চল ও রাজনৈতিক সহিংসতা কেন্দ্রিক পরিবেশে এই অস্ত্র কারবারিদের সক্রিয়তা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।
পর্যটনের আড়ালে গড়ে ওঠা এই গোপন অস্ত্র সিন্ডিকেট কক্সবাজারের নিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠছে বলে মত বিশ্লেষকদের। যথাসময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান না হলে এই চক্র আরও গভীরে প্রোথিত হতে পারে।
আটকদের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন