কক্সবাজারে তিনদিনে ৭০ কাছিমের মরদেহ উদ্ধার

3 Min Read

জাফর আলম, কক্সবাজার :

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে ৭০টি কাছিমের মরদেহ উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউট (বরি)। কাছিমগুলো জলপাই রঙের বা অলিভ রিডলি প্রজাতির।শনিবার, রবিবার ও সোমবার (২৫, ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি) সকাল ১১টা পর্যন্ত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের টেকনাফ থেকে হিমছড়ি সৈকতের পাড় থেকে মৃত কাছিমগুলো উদ্ধার করে বালিচাপা দেওয়া হয়।বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শিমুল ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের গবেষক দল শনিবার টেকনাফ উপজেলার সাবরাং জিরো পয়েন্ট থেকে উখিয়ার রূপপতি এলাকা পর্যন্ত ১২টি কচ্ছপের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

পরদিন রবিবার রূপপতি থেকে সোনারপাড়া পর্যন্ত ৫০টি এবং প্যাঁচার দ্বীপ থেকে হিমছড়ি পর্যন্ত আটটি কচ্ছপের মৃতদেহ উদ্ধার করেন তারা।তিনি জানান, সম্প্রতি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন এলাকায় কিছু সংখ্যক কচ্ছপের মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর দেন স্থানীয় লোকজন। এ তথ্যের ভিত্তিতে ইনস্টিটিউটের একটি গবেষক দলের সদস্যরা শনিবার সকাল থেকে সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে যান। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সামুদ্রিক কচ্ছপের প্রজনন মৌসুম। এ সময় মা কচ্ছপ উপকূলে ডিম দিতে আসে।

তখন অনেক কচ্ছপ জেলেদের জালে আটকে, সমুদ্রে চলাচলকারী বড় নৌযানের ধাক্কায় মারা যায়। তবে তদন্তের পর কচ্ছপগুলোর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব হবে। বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জানান, কাছিমগুলো গেলো দুই মাসে মারা গেছে। এক দুদিনে মারা গেছে এমনটি নয়। আমরা অনেকগুলো কঙ্কাল পেয়েছি। অনেকগুলো কয়েকদিন আগেও মারা গেছে।এদিকে প্রজনন মৌসুমে এভাবে কাছিমের মৃত্যুতে উদ্বেগ জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা।বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক এইচ এম এরশাদ বলেন, কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন এবং সোনাদিয়া দ্বীপ, টেকনাফ, সোনারপাড়া, পেঁচারদ্বীপ, হিমছড়ি এলাকায় আগে কাছিম ডিম পাড়তে আসত।

এখন অনিয়ন্ত্রিত পর্যটকদের কারণে কাছিম ডিম পাড়তে আসতে পারছে না। অন্যদিকে সন্দীপ, সোনাদিয়া, কুতুবদিয়া সহ বিভিন্ন উপকূলে প্রায় ২০ হাজার ট্রলার মাছ ধরতে গভীর সমুদ্র যায়। জেলেরা গভীর সাগরে ভাসমান জাল, ডুবাজাল, যন্ত্রযাপিত ট্রলার সহ ৪০/৬০ ফুট লম্বা বিহুন্দি ও লাইক্ষ্যা জাল পেতে রাখে। যেখানে কাছিম আটকে পড়ে। জেলেরা ঝামেলা এড়াতে বাঁশ, কাঠ, লোহাসহ বিভিন্ন কঠিন জিনিস দিয়ে কাছিমগুলো হত্যা করে। পরে মৃত কাছিমগুলো উপকূলে ভেসে আসে।আমরা জেলা প্রশাসন, সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউট এবং মৎস্য কর্মকর্তাদের এগুলো নিয়ে কিভাবে সমাধান করা যায় সেটির দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানাব। আমরা জেলা প্রশাসক বরাবর কাছিম বাঁচাতে স্মারকলিপি দেব বলে জানিয়েছেন তিনি।

 

newsnextbd20
Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *