করিডর বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে হবে জনগণের নির্বাচিত সংসদ থেকে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, ছবি - সংগৃহীত।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আলোচিত ‘মানবিক করিডর’ ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জনগণের মতামত ও নির্বাচিত জাতীয় সংসদের মতামতের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বৃহস্পতিবার (১ মে) মহান মে দিবস উপলক্ষে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের আয়োজিত সমাবেশে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, “দেশের স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণ মনে করে, করিডর দেওয়া না–দেওয়ার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসা উচিত জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জাতীয় সংসদের মাধ্যমে। গণতান্ত্রিক দেশে এটাই প্রচলিত রীতি।”
তিনি অভিযোগ করেন, মিয়ানমারের রাখাইনে মানবিক সাহায্য পাঠাতে বাংলাদেশকে করিডর হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিলেও জনগণ কিংবা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি।
তারেক রহমান বলেন, “বিদেশিদের স্বার্থ নয়, অন্তর্বর্তী সরকারকে আগে জনগণের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।”
রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য কিছুটা সহনীয় থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেও, তারেক রহমান বলেন, “রমজান শেষ হতেই আবার চাল ও তেলের দাম বেড়েছে। আয় বাড়েনি, অথচ খরচ বেড়েই চলেছে। এই বাস্তবতায় জনগণ তাদের দুঃখ–দুর্দশার কথা কোথায় বলবে?”
শ্রমজীবী মানুষের প্রতিনিধিত্ব নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, “দেশে সংস্কার নিয়ে আলোচনা হচ্ছে সর্বত্র। কিন্তু এই সংস্কারে শ্রমিকের কণ্ঠস্বর কোথায়? কৃষক ও শ্রমিকেরা গ্রামীণ অর্থনীতির চালিকাশক্তি। কিন্তু তাদের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরবে কে?”
তিনি বলেন, “জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ও সংসদ থাকলে জনগণের কণ্ঠস্বর নিশ্চিত করা যেত। এই কারণেই বিএনপি রাষ্ট্র ও রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনের লক্ষ্যে দেশব্যাপী সংলাপ চালাচ্ছে এবং সংস্কার বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গেও আলোচনা করছে।”
তারেক রহমান অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের একটি অংশ সংস্কার ও নির্বাচনের বিষয়টিকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে বিরোধ উসকে দিতে চাইছে।
তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “পরবর্তী নির্বাচনের রূপরেখা ও পথনকশা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করুন। তাহলে জনগণের মনে যে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে, তা দূর হবে।”
সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খানসহ অন্যরা বক্তব্য দেন। সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম। রাজধানী ও আশপাশের এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী সমাবেশে অংশ নেন।
আপনার মতামত লিখুন