কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ২২ জুন, ২০২৫, ১:১২
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল

অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ রেখে সমালোচনার মুখে পড়া প্রস্তাবিত বাজেট থেকে সেই বিতর্কিত ধারা অবশেষে বাদ দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

রোববার (২২ জুন) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের চূড়ান্ত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশেষ কর প্রদানের মাধ্যমে বিল্ডিং বা অ্যাপার্টমেন্টে বিনিয়োগ প্রদর্শনের বিধান বিলোপ করা হয়েছে।

গত ২ জুন প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। প্রাথমিকভাবে সেই বাজেটেই অপ্রদর্শিত আয়ের অর্থ আবাসন খাতে বিনিয়োগ করে বৈধ করার সুযোগ রাখা হয়েছিল। তবে পরে উপদেষ্টা পরিষদের একাধিক বৈঠকে এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরিপ্রেক্ষিতে নীতিগতভাবে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সরকার, যা এবার চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হলো।

এনবিআরের পর্যবেক্ষণ ছিল, বাড়তি হারে কর নির্ধারণের কারণে বাস্তবে কেউই কালো টাকা আবাসন খাতে বিনিয়োগ করে বৈধ করতে আগ্রহী হবেন না। ফলে এমন সুযোগ রাখার যৌক্তিকতা নেই বলেই মনে করছে সংস্থাটি।

এই পরিবর্তনের ফলে সংশ্লিষ্ট আইনে সংশোধনী এনে রাষ্ট্রপতির সম্মতি নিয়ে নির্দিষ্টকরণ অধ্যাদেশ গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে এবং তা জারি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কার্যকর হবে।

এ নিয়ে রোববার অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, যাদের অপ্রদর্শিত আয় রয়েছে, তারা এখন রেগুলার কর দেবেন। আমাদের দেশে মার্জিনাল ট্যাক্স হার ৩০ শতাংশ, সঙ্গে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ জরিমানা দিতে হবে। আমরা এটিকে কালো টাকা বলি না, তাই এটি নিয়ে কেউ আপত্তিও করেননি।

তিনি আরও বলেন, বিল্ডিং ও অ্যাপার্টমেন্টে স্কয়ার ফুট অনুযায়ী কর দিয়ে আগে যেভাবে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করা হতো, তা রেগুলার করের তুলনায় অনেক কম ছিল। এবার সেই কর হার পাঁচগুণ বাড়ানো হয়েছিল। তবু ব্যাপক বিরোধিতার মুখে থাকা বিধানটি একেবারে বাতিল করা হয়েছে।

এনবিআর চেয়ারম্যান স্পষ্ট ভাষায় বলেন, এখন আর কালো টাকা সাদা করার কোনো সুযোগ নেই।