কুবিতে ছাত্রদল নেতার সুপারিশে নকলের ব্যবহার করা ফোন ফেরত দেওয়ার অভিযোগ

কুবি প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ১৯ মে, ২০২৫, ৬:০২
কুবিতে ছাত্রদল নেতার সুপারিশে নকলের ব্যবহার করা ফোন ফেরত দেওয়ার অভিযোগ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ইংরেজি বিভাগের সেমিস্টার চূড়ান্ত পরীক্ষায় মোবাইল ফোন ব্যবহার করে নকল করার অভিযোগে আটক হওয়া দুই শিক্ষার্থীকে শাস্তির মুখে পড়তে হয়নি। বরং বিভাগীয় প্রধানের হস্তক্ষেপে তাদের ব্যবহৃত ফোন ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

আটক হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন—১৬তম আবর্তনের কাজী তাহাসিন ও সেলিম আহমেদ শিমুল। তাঁরা ‘ইন্ট্রোডাকশন টু ফিকশন (ইএনজি-১১০৪)’ কোর্সের মানোন্নয়ন পরীক্ষায় অংশ নেন। গত ১৫ মে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ পরীক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শক সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল হায়াত তাঁদের মোবাইল থেকে নকল করার সময় হাতেনাতে ধরে ফেলেন।

পরবর্তীতে উত্তরপত্র ও মোবাইল জব্দ করা হলেও তা পরীক্ষা শেষেই ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিভাগে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। পরীক্ষায় উপস্থিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একাধিক সূত্র জানায়, নকলের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক এম.এম শরিফুল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন কুবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ।

বিষয়টি নিয়ে ওই দিনই পরীক্ষাকক্ষে ক্ষোভ প্রকাশ করেন পরীক্ষা কমিটির সভাপতি সহকারী অধ্যাপক শারমিন সুলতানা। পরীক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে তিনি বলেন, “হুহ, নেতা দিয়ে কল দেয়, কত বড় সাহস!” যদিও পরে গণমাধ্যমের কাছে তিনি মন্তব্য এড়িয়ে গিয়ে বলেন, “বিষয়টি বিভাগের কনফিডেনশিয়াল, তাই কিছু বলতে পারছি না।”

নিয়ম অনুযায়ী, নকলসহ আটক শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি ও লিখিত স্বীকারোক্তি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে জমা দেওয়ার কথা। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের প্রধান মোহাম্মদ নরুল করিম চৌধুরী বলেন, “নকলের কারণে কোনো পরীক্ষা বাতিল হলে সেটি শাস্তি নয়, বরং নিয়ম। আর তদন্তের জন্য জব্দকৃত সরঞ্জাম জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক।”

তিনি আরও বলেন, নকলের ফোন ফেরত দিলে সুষ্ঠু তদন্ত বাধাগ্রস্ত হয়।

এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের পরীক্ষাটি বাতিল করা হয়েছে এবং পরীক্ষা শেষেই মোবাইল ফোন ফেরত দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা মোস্তাফিজুর রহমান শুভ বলেন, “আমি কাউকে ফোন করিনি।” তবে বিভাগের দুই শিক্ষকসহ একাধিক শিক্ষার্থী নিশ্চিত করেছেন, “তিনি অধ্যাপক শরিফুল করিমকে ফোন করেছিলেন।”

অন্যদিকে অধ্যাপক শরিফুল করিম বলেন, “আমার সঙ্গে অনেকেরই ইনফরমাল কথা হয়। এ বিষয়ে আমি কোনো বক্তব্য দিতে চাই না।”

ঘটনার তদন্ত ও শাস্তির বিষয়ে এখনও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।