কুবির আইন বিভাগে মুট কোর্ট সোসাইটির চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন বিভাগে মুট কোর্ট সোসাইটির আয়োজনে প্রথম মুট কোর্ট প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব ও সনদপত্র প্রদান অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের দুটি দল অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দলকে সনদপত্র প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য ও আইন বিভাগের ডিন অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান, কুমিল্লা জেলা কোর্টের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. ইমাম হাসান এবং সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার হোসেন সাগর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক মো. আলী মুর্শেদ কাজেম।
আইন বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা সহকারী অধ্যাপক মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, আজকের আয়োজনে সকল শিক্ষার্থীর সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে—এ জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। যারা মুটিং, খেলাধুলা, বিতর্ক বা গান-সংগীতে যুক্ত থাকে, তারা সাধারণত কোনো অসদাচরণে জড়িত হয় না। তাই আমি শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করব, এ ধরনের গঠনমূলক ও সৃজনশীল আয়োজনে বেশি বেশি অংশগ্রহণ করবেন, যাতে কোনো শাস্তিমূলক পরিস্থিতির সম্মুখীন না হতে হয়। পরিশেষে আমি শুধু এটাই বলতে চাই—‘মোর নাম এই বলে হোক খেত, আমি তো তোমাদেরই লোক।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, ‘আজকের এই সুন্দর আয়োজনের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের আদালতের প্রচলিত প্র্যাকটিসকে একাডেমিকভাবে উপস্থাপনের একটি দৃষ্টান্ত দেখলাম—যেটিকে আপনারা ‘মুট কোর্ট’ বলে থাকেন। এ আয়োজন সফল করতে আপনাদের যে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে, তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমাদের আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্যতম।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল বলেন, ‘ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত না হলে আইন প্রতিষ্ঠিত হয় না, আইন প্রতিষ্ঠিত না হলে নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয় না, আর নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত না হলে যেকোনো প্রতিষ্ঠান, সরকারসহ সবকিছুই ঝুঁকির মুখে পড়ে যায়। এতে সমাজে নেতিবাচক চর্চা বিস্তার লাভ করে।’ তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘সাবস্ট্যানটিভ ও নরমেটিভ রেশনালিটি অর্জন করতে হবে, যাতে যে কাজই করা হোক না কেন, তা সত্য ও ন্যায়ের পথে থাকে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইন অনুষদের ডিন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, ‘এত সুন্দর একটি মুট কোর্টের আয়োজন সত্যিই প্রশংসনীয়। দুইজন মাননীয় বিচারক তাঁদের মূল্যবান সময় দিয়ে উপস্থিত হয়েছেন—এজন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। ভবিষ্যতে এ ধরনের আয়োজন আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া সম্ভব। আশেপাশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে বছরে অন্তত একবার এমন কনফারেন্স আয়োজন করা উচিত। এতে শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক যোগাযোগ ও পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।’
সভাপতির বক্তব্যে আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক মো. আলী মুর্শেদ কাজেম বলেন, ‘আজ আইন বিভাগের জন্য অত্যন্ত আনন্দের একটি দিন। এই আয়োজন সফল করতে বিভাগের প্রায় সবাই অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আমরা মুট কোর্ট প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ডের মাধ্যমে এই আয়োজনের পরিসমাপ্তি ঘটালাম। সামনে আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রোগ্রাম হাতে নেওয়া হয়েছে, যা শিক্ষক মণ্ডলী ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় ইনশাআল্লাহ সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।’
আপনার মতামত লিখুন