গলে শান্তর ডাবল সেঞ্চুরি, জয় হাতছাড়া বাংলাদেশের

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশ: ২১ জুন, ২০২৫, ১:১৪
গলে শান্তর ডাবল সেঞ্চুরি, জয় হাতছাড়া বাংলাদেশের

দেড় বছরের অপেক্ষা ভেঙে প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেছিলেন টেস্ট অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলমান টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও একই ধারাবাহিকতায় তুলে নিয়েছেন আরেকটি দুর্দান্ত শতক। টেস্ট নেতৃত্ব পাওয়ার পর শান্তর ব্যাটিংয়ে যে আত্মবিশ্বাস ও দায়িত্ববোধের ছাপ, এই ইনিংস যেন তারই নিখুঁত প্রতিফলন।

দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে নামার সময় বাংলাদেশ ছিল চাপের মুখে। লিড ছিল অল্প, আর পিচে দেখা দিচ্ছিল ভিন্নতা। এই কঠিন পরিস্থিতিতে শান্ত খেলেন ধৈর্য্য ও সংহতিতে ভর করে। ১৯০ বল মোকাবিলা করে ৯টি চারে পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের সপ্তম টেস্ট শতক। উইকেটের অন্য প্রান্তে সঙ্গীদের সঙ্গে বারবার আলোচনা আর চোখেমুখে ছিল প্রতিজ্ঞা—দেশের জন্য লড়াই চালিয়ে যাবেন।

প্রথম ইনিংসে শান্ত অপরাজিত ছিলেন ১৪৮ রানে, করেছিলেন ২০২ বলের ইনিংস, মারেন ১১টি চার ও একটি ছক্কা। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে গড়া ২৬৪ রানের জুটি বাংলাদেশকে নিয়ে গিয়েছিল নিরাপদ স্থানে। দ্বিতীয় ইনিংসের শতকটি এল আরও কঠিন পরিস্থিতিতে—শারীরিক ক্লান্তি আর মানসিক চাপ উভয়ের সঙ্গেই লড়তে হয়েছে তাকে।

এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে শান্ত টেস্ট ইতিহাসে ১৫তম ব্যাটার হিসেবে দুই ইনিংসেই শতক করার কীর্তি গড়লেন। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে তিনিই একমাত্র ব্যাটার, যিনি এই অর্জন দুইবার করেছেন।

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ২৯৬ রানের লক্ষ্য দেয় শ্রীলঙ্কাকে, তবে হাতে ছিল মাত্র ৩৭ ওভার। শেষ পর্যন্ত লঙ্কানরা ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ ড্র করে নেয়। নাটকীয়তার পরিণতি হয় সাদামাটা সমাপ্তিতে। আর টাইগারদের মনে থেকে যায় একটাই প্রশ্ন—ইনিংস ঘোষণা কি একটু আগেই করা যেত না?

এ নিয়েই উঠেছে আলোচনা। শান্তর শতক পূর্ণের সময় বাংলাদেশ অত্যন্ত ধীরে খেলেছে। ৫০ বল খেলে মাত্র ১৯ রান সংগ্রহের পর হঠাৎ করেই ১৬ বলে আসে ২৮ রান—তার মধ্যে ছিল শান্তর তিনটি ছক্কা। এই দেরিতেই হয়তো হারিয়ে গেছে জয়ের সম্ভাবনা।

তবে স্পিন-বান্ধব উইকেটে শেষ বেলায় তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান তুলে নেন গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। তাইজুল নেন তিনটি—তার মধ্যে ছিল বিদায়ী অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। নাঈম তুলে নেন প্রথম ইনিংসে ১৮৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলা পাথুম নিশাঙ্কার উইকেট। কিন্তু সময় ছিল খুবই কম।

বাংলাদেশের জয়টা তাই রয়ে গেল ‘যদি’-এর ফ্রেমে বাঁধা।

জয় আসেনি, কিন্তু শান্তর টানা দুই সেঞ্চুরিতে স্বস্তি খুঁজছে টিম বাংলাদেশ। এই ইনিংস শুধু পরিসংখ্যান নয়, একজন অধিনায়কের আত্মবিশ্বাসের বার্তাও।