গাজীপুরে ডাকাতি, দুর্ঘটনা, খুন ও গণপিটুনি: নাটকীয় সমাপ্তি দুই প্রাণহানিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ২০ জুন, ২০২৫, ৮:৪০
গাজীপুরে ডাকাতি, দুর্ঘটনা, খুন ও গণপিটুনি: নাটকীয় সমাপ্তি দুই প্রাণহানিতে

গাজীপুরের শ্রীপুরে গতকাল গভীর রাতে এক ভয়াবহ ও নাটকীয় ডাকাতির ঘটনায় দুইজন নিহত এবং চার ডাকাত সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। নিহতদের একজন ডাকাত দলের সদস্য, অপরজন একজন সিএনজি অটোরিকশা চালক। পুরো ঘটনাটি সংঘটিত হয় শ্রীপুর উপজেলার মাওনা-সাতখামাইর-বরমী আঞ্চলিক সড়কের সাতখামাইর বাজার সংলগ্ন মাজার এলাকায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে।

নিহত ডাকাত সদস্যের নাম মো. আরিফ হোসেন (২২)। তিনি কুমিল্লা জেলার হাবিবুর রহমানের ছেলে। অপরদিকে নিহত সিএনজি চালক আবুল কালাম (৪০) শ্রীপুরের টেপিরবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা এবং মো. গিয়াস উদ্দিনের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ডাকাতির শিকার পিকআপচালক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, তিনি শ্রীপুরের এমসি বাজার থেকে বরমীর দিকে পিকআপ নিয়ে যাচ্ছিলেন। রাত ৩টার দিকে সাতখামাইর বাজার এলাকায় পৌঁছালে ৬-৭ জনের একটি ডাকাত দল রাস্তায় গাছ ফেলে তার গাড়ি থামায়। এরপর তারা মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা লুটে নেয়। একই সময়ে রাস্তা দিয়ে আসা অন্যান্য যানবাহনের দিকেও ছড়িয়ে পড়ে ডাকাতির ঘটনা।

ঘটনার একপর্যায়ে দ্রুতগতির একটি সিএনজি অটোরিকশা এসে এক ডাকাত সদস্যকে ধাক্কা দিলে সে গুরুতর আহত হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ডাকাতরা সিএনজি চালক আবুল কালামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।

ডাকাতির শিকার যাত্রীরা চিৎকার শুরু করলে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং হামলাকারীদের ধাওয়া দিয়ে একজনকে ধরে গণপিটুনি দেন। আহত ডাকাত সদস্য আরিফ পরে মারা যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় সিএনজি চালক আবুল কালামকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে ঢাকায় রেফার করার পথে তিনিও মারা যান।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল বারিক জানান, পুলিশের টহল দল এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ডাকাত দলের চার সদস্যকে আটক করে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ডাকাত সদস্য আরিফকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সিএনজি চালক আবুল কালামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হচ্ছিল, কিন্তু পথে তার মৃত্যু হয়।

ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং আটককৃত ডাকাতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। স্থানীয়দের সাহসী প্রতিরোধে বড় ধরনের ডাকাতি ঠেকানো গেলেও দুটি প্রাণহানি পুরো এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া ফেলেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, এমন সড়ক ডাকাতি ঠেকাতে তারা আরও কড়া নজরদারি চালাবে।