সকাল ১১টার দিকে সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। এতে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ সচিবালয় সংযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবির এবং কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম। তারা মিছিল থেকে বারবার ‘অবৈধ কালো আইন মানব না’, ‘আপস নয় সংগ্রাম’, ‘রক্তে আগুন লেগেছে’—এই ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন।
বিভিন্ন দপ্তর থেকে নেমে এসে আন্দোলনে যোগ দেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা দাবি জানান, সরকার ঘোষিত সংশোধিত অধ্যাদেশটি ‘নিবর্তনমূলক ও কর্মচারীবিরোধী’ এবং এটি অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। দাবি না মানলে তারা সচিবালয়ে তালা লাগিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়াটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর থেকেই কর্মকর্তারা আন্দোলন শুরু করেন। তবে সরকার তাদের দাবি উপেক্ষা করে গতকাল সন্ধ্যায় গেজেট প্রকাশ করে, যেখানে বলা হয়—এই অধ্যাদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইনের ধারা ৩৭-এর পর ‘৩৭ক’ নামক নতুন ধারা যুক্ত করা হবে।
নতুন ধারায় সরকারি কর্মচারীদের জন্য চার ধরনের অপরাধ এবং তিন ধরনের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। অপরাধগুলোর মধ্যে রয়েছে—অন্য কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য বা শৃঙ্খলা ভঙ্গের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, সংঘবদ্ধভাবে কিংবা এককভাবে অকারণে কাজে অনুপস্থিত থাকা, অন্যকে কাজে না আসতে প্ররোচিত করা কিংবা উসকানি দেওয়া। এসব অপরাধের জন্য বরখাস্ত, অব্যাহতি কিংবা পদাবনতি বা বেতন কর্তনের মতো শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীরা মনে করছেন, এই বিধান কার্যকর হলে সরকারি চাকরিজীবীরা মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন এবং তাদের ন্যায্য প্রতিবাদ দমন করার হাতিয়ার হিসেবে এই আইন ব্যবহৃত হবে। ফলে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সরকারি কর্মচারীদের দাবি ও আপত্তি পর্যালোচনার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় একটি স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন করেছে। গতকাল এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে। তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, খসড়া প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না।
আপনার মতামত লিখুন