চিরতরে থেমে গেল ইউশার পথচলা, এক অভিমানের অকাল বিদায়

বাবা সাংবাদিক শাহাদাত হোসেনের সাথে ছেলে শাফায়েত হোসেন ইউশা, সাথে চিঠি।
দৈনিক ফেনীর সময় সম্পাদক ও ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোঃ শাহাদাত হোসেনের বড় ছেলে শাফায়েত হোসেন ইউশা আর নেই। ঢাকার বিএএফ শাহীন কলেজের হোস্টেলের এক ঘরেই অভিমানে নিজের জীবন শেষ করেছেন এই তরুণ। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
একটি অপূর্ণ সিলেকশন, কিছু না বলা কষ্ট, এবং একজন সন্তানের হৃদয়ের গহীনে গাঁথা বাবার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা—সব মিলিয়ে হয়তো ইউশা আর বহন করতে পারেননি তার মানসিক চাপ। রেখে গেছেন একটি হৃদয়বিদারক চিঠি, যেখানে তিনি মা-বাবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এবং তুলে ধরেছেন বাবার অসুস্থ সময়ের স্মৃতি।
চিঠিতে ইউশা লিখেছেন:
সরি, পারলে আমারে কে মাফ করে দিও।
এতো চাপ আর নিতে পারছি না। কলেজ সিলেকশনের সময় হয়তো মিনেই ছিল না আমার বাবার জন্য খুব চাপ হয়ে যাবে। সরি বাবা, গত বছর এই দিনে বাবার হার্ট অ্যাটাক এর পর ঠিক এই সময়টাতেই জ্ঞান ফেরার পর আমাকে খুঁজে ছিলেন।
আমি তখনও সিসিইউ’র আসনে দাঁড়িয়ে। ছুটে যাই বাবার কাছে। আমাকে ইউশা বলে ডাকতেই বুকের ভেতর ধক করে উঠেছিল।
কাছে ডেকে মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিলেন, ‘কিছুই হবে না, আব্বু ঠিক আছি, টেনশন করিস না।’
আম্মু, এখন আর আমার জন্য টাকা পাঠাতে হবে না।
ভালো থাকো তোমরা। আল্লাহ হাফেজ।”
যেখানে একজন বাবা সন্তানের জন্য দুনিয়ার সব চাওয়া ত্যাগ করতে প্রস্তুত থাকেন, সেখানে সেই বাবার কাঁধেই ফিরলো পৃথিবীর সবচেয়ে ভারী বস্তু—নিজ সন্তানের লাশ।
শাহাদাত হোসেনের পরিবারে এখন শুধুই শোকের ছায়া। সন্তান হারানোর এই বেদনা ভাষায় প্রকাশের নয়। সহকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী এবং সাংবাদিক সমাজ ইউশার অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
সাপ্তাহিক স্বদেশপত্র ও শমসের নগর পরিবার শোকাহত পরিবারটির প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে। একই সঙ্গে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন তারা।
আপনার মতামত লিখুন