ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মিলে সাংবাদিককে হেনস্থার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা :
প্রকাশ: ২৫ জুন, ২০২৫, ৩:১৪
ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মিলে সাংবাদিককে হেনস্থার অভিযোগ

স্বেচ্ছসেবকদল নেতা মিলন (বামে) ও ছাত্রলীগ কর্মী বায়েজিদ (ডানে)। ছবি: সংগৃহীত।

সংবাদ প্রকাশের জেরে পাবনার ভাঙ্গুড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক আমার দেশের প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান ফারুককে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মিলন সরকার ও ছাত্রলীগ কর্মী বায়েজিদ হোসেন এর বিরুদ্ধে।

বুধবার (২৫ জুন) বিকেল তিনটার দিকে ভাঙ্গুড়া পৌর শহরের শরৎনগর বাজারে আখের টি স্টলে এই ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত মিলন ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহবায়ক এবং বায়েজিদ দিলপাশার ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মী ও পাবনা-৩ আসনের সাবেক সাংসদ আলহাজ মকবুল হোসেন এর আত্মীয়।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে বায়েজিদ এর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, সাধারণ মানুষকে নির্যাতন ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, এক বছর আগে দৈনিক খোলা কাগজের ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি মানিক হোসেনকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করেছিলেন ছাত্রলীগ কর্মী বায়েজিদ। এতে মানিকের পায়ের হাড় ভেঙে গিয়ে গুরুতর আহত হযন। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করেন মানিক হোসেন। তবে ওই সময় বায়েজিদ আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আলহাজ মকবুল হোসেনের প্রভাবে ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন। এ অবস্থায় আদালত বায়েজিদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করলে পুলিশ গত ২১ জুন রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে পরদিন ২২ জুন দুপুরে জেলহাজতে পাঠায়।

এ নিয়ে ২২ জুন ভাঙ্গুড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও আমার দেশ প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান ফারুক ‘সাংবাদিকের ওপর হামলা; এক বছর পর ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেপ্তার’ শিরোনামে একটি নিউজ করেন। সেটি পরে নিজের ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করেছিলেন সাংবাদিক ফারুক। ওইদিন বিকেলে বায়েজিদ জামিনে মুক্ত হয়ে এলাকায় ফিরে যান।

এদিকে সেই সংবাদ প্রকাশের জেরে বুধবার দুপুরে বায়েজিদ তার তথাকথিত আত্মীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মিলন সরকারকে নিয়ে আখের টি স্টলে মনিরুজ্জামান ফারুককে দেখে তাকে নিয়ে নানা উস্কানীমুলক কথা বলতে থাকেন। এ সময় মনিরুজ্জামান ফারুক ওই দুইজনের ভিডিও ধারণ করেন। এতে মিলন ক্ষিপ্ত হয়ে মনিরুজ্জামান ফারুককে ভিডিও ডিলিট করতে নানাভাবে হেনস্থা করেন। এ সময় মিলন নিজেকে উচ্চপদস্থ সেনাবাহিনীর অফিসার ও সচিবের আত্মীয় বলে লোকজনের সামনে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

এ বিষয়ে পাবনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ইয়ামিন খান বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দু:খজনক ও নিন্দনীয় কাজ করেছে। কোন সাংবাদিককে হেনস্তা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না। ইতোমধ্যে আমি উপজেলা সংগঠনকে বলে দিয়েছি, মিলন এর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আমি বুঝে নেব ইনশাআল্লাহ।’

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমরা অবগত আছি। ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে তর্কবিতর্ক হয়েছে। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।’