জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলো হিমালয় থেকে আসা জলবিদ্যুৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ১৫ জুন, ২০২৫, ৩:৪৪
জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলো হিমালয় থেকে আসা জলবিদ্যুৎ

নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করে সেটি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করেছে বাংলাদেশ। শনিবার (১৫ জুন) রাত ১২টার দিকে ভারতের সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করে প্রথম দফায় ৩৮ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসে। ভেড়ামারা হয়ে এই বিদ্যুৎ যুক্ত হয় জাতীয় গ্রিডে। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ হয়েছে ৭ টাকা ৮৭ পয়সা (৬ দশমিক ৪ সেন্ট)।

বাংলাদেশ-নেপাল পাঁচ বছরের একটি চুক্তি অনুসারে প্রতি বছর ১৫ জুন থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাস এই বিদ্যুৎ আমদানি করা হবে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে পরীক্ষামূলকভাবে এক দিনের জন্য সীমিত পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছিল নেপাল।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, শনিবার রাত ১২টা থেকে রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রতি ঘণ্টায় ৩৮ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ সরবরাহ পেয়েছে বাংলাদেশ। ভারতের মুজাফফরপুর-বাহারামপুর হয়ে ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইনের মাধ্যমে এই বিদ্যুৎ প্রবাহিত হচ্ছে।

বিদ্যুৎ খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে বিদ্যুৎ আদান-প্রদানে বড় সুযোগ রয়েছে। নেপাল জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম এবং গ্রীষ্মকালে তাদের উৎপাদন চাহিদার চেয়ে বেশি হয়। সেই উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ বাংলাদেশ ব্যবহার করতে পারে। অন্যদিকে শীতকালে, যখন নেপালে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যায়, তখন বাংলাদেশে চাহিদাও কম থাকে, ফলে সে সময় বাংলাদেশ তার উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ নেপালে রপ্তানির সুযোগ পেতে পারে।

২০২৩ সালে নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহালের ভারত সফরের সময় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানির আগ্রহ প্রকাশের মধ্য দিয়ে আলোচনার সূত্রপাত হয়। এরপর ২০২৪ সালের ১১ জুন বাংলাদেশ সরকার বিদ্যুৎ কেনার অনুমোদন দেয় এবং ৩ অক্টোবর কাঠমান্ডুতে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

চুক্তিটি নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটি (এনইএ), বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং ভারতের এনটিপিসি বিদ্যুৎ ব্যবসা নিগম (এনটিপিসি)-এর মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৯ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর নির্ধারিত পাঁচ মাস নেপাল থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পাবে বাংলাদেশ।

এ ছাড়া নেপালের সুঙ্কোশি-৩ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে পিডিবি। এ বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে।