ঝালকাঠি সদরে ৯ কিলোমিটারের ভাঙাচোরা পথে সীমাহীন দুর্ভোগ

‎কাজী সোলায়মান সুমন, ঝালকাঠি :
প্রকাশ: ১ জুন, ২০২৫, ১:৪৭
ঝালকাঠি সদরে ৯ কিলোমিটারের ভাঙাচোরা পথে সীমাহীন দুর্ভোগ

প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সড়ক বর্তমানে চরম বেহাল অবস্থায় রয়েছে।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার সংগ্রামনীল পুলিশ বক্স থেকে সারেঙ্গল বাজার পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সড়ক বর্তমানে চরম বেহাল অবস্থায় রয়েছে। সড়কজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে বড় বড় গর্ত, কোথাও পিচ উঠে গিয়ে কাদা-পানিতে পরিণত হয়েছে। এই সড়কে প্রতিদিন শত শত মানুষ, বিশেষ করে শিক্ষার্থী, রোগী ও সাধারণ মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), ঝালকাঠি সূত্রে জানা গেছে, সড়কটির আইডি নম্বর ৫৪২৪৩০১১। ২০০১-২০০২ অর্থবছরে আরডিপি-১৯ প্রকল্পের আওতায় সড়কটির প্রথম ৪ কিলোমিটার নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে আরও আংশিকভাবে নির্মাণ ও সংস্কার হলেও সর্বশেষ ২০১৮ সালে মাত্র ১ কিলোমিটার অংশে সংস্কার করা হয়। তারপর থেকে আর কোনো কাজ হয়নি। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এখন পুরো সড়ক ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

সড়কটিতে রয়েছে একাধিক পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ কালভার্ট। এর মধ্যে একটি কালভার্ট এতটাই বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে যে, স্বাভাবিকভাবে যানবাহন চলাচল করা সম্ভব নয়। পূর্ব তারুলী গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম রানা জানান, এলাকাবাসীর সহায়তায় মোটা কাঠের তক্তা ও কার্ডবোর্ড দিয়ে একটি অস্থায়ী পথ তৈরি করা হয়েছে, যাতে বড় কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সালাউদ্দিন সোহাগ বলেন, স্কুলগামী শিশুরাই সবচেয়ে বেশি কষ্টে রয়েছে। বর্ষাকালে তারা কাদায় ভিজে স্কুলে আসে, কেউ কেউ পড়ে গিয়ে আহত হয়। তিনি বলেন, এটি আর শুধু সংস্কার নয়, বরং পুনঃনির্মাণের প্রয়োজন।

৪নং কেওড়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব হেমায়েত উদ্দিন হিমু বলেন, বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি এই সড়কটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কার। আমরা আশা করছি দ্রুত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ঝালকাঠি এলজিইডির সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী শিপলু কর্মকার জানান, সড়কটি সংস্কারের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।

সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন একটি ইউনিয়ন পরিষদ, একাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চলাচল করেন। এছাড়া কৃষিপণ্য পরিবহনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে গ্রামীণ জনগণের যাতায়াতে এই সড়ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে অবহেলিত থেকে সড়কটি এখন জনদুর্ভোগের প্রতীক হয়ে উঠেছে। স্থানীয়দের প্রত্যাশা, আর কালক্ষেপণ না করে দ্রুত সড়কটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কার বা পুনঃনির্মাণের কার্যক্রম শুরু হবে।