ঠিকানার গরমিল: সিরাজগঞ্জে রেলওয়ের ক্ষতিপূরণের সাড়ে ৩ কোটি টাকা আটকে

রাকিবুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ :
প্রকাশ: ৪ আগস্ট, ২০২৫, ৬:২১
ঠিকানার গরমিল: সিরাজগঞ্জে রেলওয়ের ক্ষতিপূরণের সাড়ে ৩ কোটি টাকা আটকে

সিরাজগঞ্জের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখায় দুই বছর ধরে পড়ে আছে বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ। মূলত সঠিক ঠিকানা উল্লেখ না করায় রেল কর্তৃপক্ষ এখনো এই টাকা উত্তোলন করতে পারেনি।

এলএ শাখার কর্মকর্তা আকবর হোসেন জানান, সিরাজগঞ্জে রেলওয়ের ১৬ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এ জন্য পৃথক ৬টি নোটিশে সাড়ে তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের ২৭ জুলাই জেলা ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সুইচিং মং মারমা রেলওয়ের বরাবর ওই নোটিশ জারি করেন। সেখানে ২০১৭ সালের ‘স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন’-এর অধীনে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে ৩শ টাকার স্ট্যাম্পসহ হাজির হয়ে টাকা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, ওই নোটিশে রেলওয়ের সুনির্দিষ্ট ঠিকানা—যেমন বাংলাদেশ রেলওয়ে পাকশি, রাজশাহী, ঢাকা বা রেল মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ ঠিকানা—উল্লেখ না থাকায় তা সঠিক গন্তব্যে পৌঁছায়নি।

এ বিষয়ে রেলওয়ের উল্লাপাড়া এলাকার কানুনগো আবু বক্কার বলেন, “আমি এখানে নতুন যোগ দিয়েছি। অধিগ্রহণসংক্রান্ত কোনো তথ্য এখনো আমার কাছে আসেনি। তবে সড়ক বিভাগ কিছু জায়গায় রাস্তা করেছে।”

পাকশি রেলওয়ে বিভাগের ভূমি কর্মকর্তা আরিফ জানান, “সিরাজগঞ্জে রেলওয়ের জমি নতুন করে অধিগ্রহণ হয়েছে—এমন কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। বিষয়টি স্থানীয় ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে জানা যেতে পারে।”

এদিকে সিরাজগঞ্জের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা শাহীন মিয়া বলেন, “নোটিশ আগেই পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু রেলওয়ে টাকা উত্তোলন করেনি। আমরা আবার নতুন করে নোটিশ পাঠাব।”

উল্লেখ্য, সিরাজগঞ্জ রেলওয়ের অধীনে রয়েছে প্রায় ৫৪৫ একর জমি। এর মধ্যে মাত্র ২ একর জমির জন্য সরকার রাজস্ব পায়। জেলার উল্লাপাড়া, কামারখন্দ এবং সদর এলাকায় রেলওয়ের ইয়ার্ড, দোকান ও অন্যান্য স্থাপনা থেকে বছরে প্রায় ২৫ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়।

অথচ বাজারমূল্যে প্রতি একর জমির বানিজ্যিক হার প্রয়োগ করলে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ কয়েকশ কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারত বলে মনে করেন রেলওয়ে কর্মকর্তারা। সরকারের যথাযথ নজরদারি ও সমন্বয় না থাকায় এই সম্ভাবনাটিও থেকে যাচ্ছে অব্যবহৃত।