নতুন নেতৃত্বে বিজিএমইএ: স্বচ্ছতা, প্রযুক্তি ও খরচ কমানোর অঙ্গীকার

বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) নবনির্বাচিত সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবুর নেতৃত্বাধীন পরিচালনা পর্ষদ আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। দায়িত্ব নিয়ে তিনি পোশাক খাতের বিদ্যমান ও আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে সব পর্যায়ে ব্যবসার খরচ কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সোমবার রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রশাসক আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে নতুন পর্ষদের দায়িত্ব গ্রহণ করেন মাহমুদ হাসান খান বাবু। অনুষ্ঠানে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান, ড. রুবানা হক, আনিসুর রহমান সিনহা, এসএম ফজলুল হকসহ বিপুলসংখ্যক সদস্য ও ব্যবসায়ী নেতা উপস্থিত ছিলেন। সভার শুরুতে সংগঠনের কানাডা শাখার সাবেক সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিবের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়।
বক্তব্যের শুরুতে জুলাই আন্দোলনের নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে নবনির্বাচিত সভাপতি বলেন, ‘তাদের কারণে এখন প্রাণ খুলে কথা বলা যাচ্ছে।’ বিজিএমইএকে একটি সেবামুখী ও জবাবদিহিমূলক সংগঠন হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করে সদস্যদের জন্য সেবা গ্রহণ, তথ্য পাওয়া ও অভিযোগ জানানো সহজ করা হবে।
তিনি জানান, আগামী ১ জুলাই থেকে বিজিএমইএর সদস্যদের জন্য সেবার ফি ২৫ শতাংশ হ্রাস করা হবে। একইসঙ্গে তিনি খাত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য খরচ কমাতেও উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান। এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী চ্যালেঞ্জ, এসএমই উদ্যোক্তাদের বিশেষ সহায়তা, কাস্টমস ও ভ্যাট প্রক্রিয়ায় সরলীকরণ, এবং খেলাপি ঋণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কার্যকর এক্সিট প্ল্যান তৈরির প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য পাল্টা শুল্কারোপ, ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল, উচ্চ সুদ ও মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, মজুরি বৃদ্ধি এবং দুর্বল অবকাঠামো, এসবকে বর্তমান সময়ের বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন নবনির্বাচিত সভাপতি। একইসঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা তেলের দামে প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘ভিন্ন প্যানেলে নির্বাচন করলেও এখন আমরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। ঐক্যবদ্ধ হয়ে সব অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করব।’ অনুষ্ঠানে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান নতুন নেতৃত্বকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, পোশাক খাতের উন্নয়নে সকলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে এবং নতুন ভবনকে কার্যকরভাবে কাজে লাগাতে হবে।
সাবেক সভাপতি রুবানা হক বলেন, বিজিএমইএর নির্বাচন এবার ছিল স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ। নতুন নেতৃত্বের কাছে প্রত্যাশা অনেক বেশি। আনিসুর রহমান সিনহা বলেন, এ শিল্প একসময় ‘দর্জি ব্যবসা’ নামে পরিচিত ছিল, কিন্তু এখন এটি অন্যতম চ্যালেঞ্জিং ও সম্ভাবনাময় খাত।
দায়িত্ব হস্তান্তরের সময় বিজিএমইএর প্রশাসক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, নানা অনিশ্চয়তার মধ্যেও নিরপেক্ষ ও সুশৃঙ্খল নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হয়েছে। আগামী দিনে পোশাক খাতের রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন : বিজিএমইএর নতুন সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, দায়িত্ব নেবেন মঙ্গলবার
আপনার মতামত লিখুন