রোববার রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া জরুরি।
তিনি বলেন, হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করে দেশের প্রতিটি নাগরিককে সরকারবিরোধী গঠনমূলক সমালোচনায় সোচ্চার থাকতে হবে।
জনগণ সরকারের করুণার পাত্র নয় উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, সরকারকে জনগণের কথা শুনতেই হবে এবং তাদের ন্যায্য দাবি মানতে বাধ্য। এখানে সরকারের মান-অভিমান কিংবা রাগ-বিরাগের কোনো সুযোগ নেই।
অনুষ্ঠানে দলের ১৮ বছরের যাত্রাপথ নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
তারেক রহমান বলেন, রাষ্ট্রে স্বৈরাচার কিংবা ফ্যাসিবাদ রুখতে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নই সবচেয়ে জরুরি। সরাসরি ভোটে নির্বাচিত সরকারই জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য হয়। আর এই জবাবদিহিতার মাধ্যমেই সরকারের ফ্যাসিবাদী চরিত্র রোধ করা সম্ভব।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা থাকলেও সেটি জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। তারেক রহমান বলেন, নির্বাচন ও বাজেট পরিকল্পনার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনগণকে অন্ধকারে রেখে কিংবা রাজনৈতিক দলগুলোকে অনিশ্চয়তায় রেখে কোনো সিদ্ধান্ত কার্যকর বা টেকসই হয় না।
তিনি বলেন, নিয়মমাফিক অন্তর্বর্তী সরকারকে চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করতে হবে। অথচ এনবিআরের ওপর হঠাৎ সংস্কার চাপিয়ে দেওয়ার ফলে রাজস্ব আদায়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, যা অর্থনীতির জন্য হুমকিস্বরূপ।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাবে দেশে-বিদেশি বিনিয়োগে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, প্রতিদিনই জনগণ বিভিন্ন দাবিতে রাজপথে নামছে, কিন্তু সেই দাবি শোনার কেউ নেই। এই অস্থিরতা নিরসনে অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন সময়মতো হওয়া আবশ্যক।
তিনি জানান, রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের সঙ্গে দেখা করে নির্বাচন নির্ধারণে সুস্পষ্ট দিন-তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। বিএনপি চায় ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হোক। সেই লক্ষ্যে জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাঠামোগত সংস্কারে দলটি পূর্ণ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদ যাতে কোনোভাবেই ফিরে না আসতে পারে, তা নিশ্চিত করাই এখন প্রতিটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। রাষ্ট্র ও রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন সাংবিধানিক ও আইনগত সংস্কার।
তিনি আরও বলেন, অল্প বা বেশি সংস্কার বলে কিছু নেই। রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া।
সভায় সভাপতিত্ব করেন এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম ও লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন