নিম্নচাপের প্রভাবে বাড়ছে নদীর পানি, কয়েক জেলায় বন্যার আশঙ্কা

ফাইল ছবি।
সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় টানা বৃষ্টিপাতের ফলে নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। আবহাওয়া ও বন্যা পূর্বাভাস সংস্থাগুলোর তথ্য বলছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলায় নতুন করে বন্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এই পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। এর ফলে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও চট্টগ্রামসহ দেশের দক্ষিণ-পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, হালদা, গোমতী, ফেনী, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। আগামী দুই দিনে এসব নদীর অববাহিকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তৃতীয় দিনেও থাকবে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস। এর ফলে মুহুরী নদী সতর্কসীমা অতিক্রম করতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার উদয় রায়হান জানান, নিম্নচাপ এবং সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় টানা বৃষ্টি হচ্ছে, বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে। এতে নদ-নদীর পানি বাড়ছে এবং এর সঙ্গে নিম্নচাপজনিত জলোচ্ছ্বাসও যুক্ত হচ্ছে, যা বন্যার ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, এই অবস্থায় ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় নতুন করে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম শহর ও আশপাশের এলাকাতেও সাময়িক জলাবদ্ধতা বা বন্যার শঙ্কা রয়েছে।
এদিকে, সিলেট বিভাগের নদ-নদীর পরিস্থিতিও পর্যবেক্ষণে রয়েছে। কংস নদীর পানি বাড়ছে, যাদুকাটা নদীর পানি বর্তমানে স্থিতিশীল, আর সারিগোয়াইন ও সোমেশ্বরী নদীর পানি কিছুটা কমলেও এখনও বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় এ নদীগুলোর পানি বাড়তে পারে এবং সতর্কসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানিও ধীরে ধীরে বাড়ছে।
উত্তরাঞ্চলে তিস্তা নদীর পানি কমছে এবং তা দুই দিন স্থিতিশীল থাকার পর বাড়তে পারে। তবে তা বিপৎসীমার নিচেই থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানিও আপাতত হ্রাস পাচ্ছে এবং আগামী কয়েক দিন পর্যন্ত এই প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ভারতের স্থলভাগে অবস্থান করছে এবং এর প্রভাবে দেশের ওপর সক্রিয় রয়েছে মৌসুমি বায়ু। এর ফলে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ঝোড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টির পাশাপাশি নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে এক থেকে তিন ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।
সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো সতর্ক নজর রাখছে এবং স্থানীয় প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন