বরিশালে ডাচ্ বাংলা এজেন্ট নাইম কোটি টাকা আত্মসাৎ করে উধাও

রানা সন্যামত, বরিশাল ব্যুরো :
প্রকাশ: ৩১ জুলাই, ২০২৫, ১১:১১
বরিশালে ডাচ্ বাংলা এজেন্ট নাইম কোটি টাকা আত্মসাৎ করে উধাও

বরিশালের সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের কাকাশুরা বাজারে ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট কর্মকর্তা নাইম গ্রাহকদের প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করে উধাও হয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় স্থানীয় সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ, হতাশা ও অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়েছে। নিজের আমানত ফেরত পেতে এখন অনেকেই দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরে ওই বাজারে ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট হিসেবে কাজ করে আসছিলেন নাইম। গ্রামের সহজ-সরল মানুষজন তার ওপর ভরসা রেখে ডিপিএস, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ ও নানা লেনদেন করতেন।

তবে গত এক মাস ধরে নাইমকে বাজারে দেখা যাচ্ছে না এবং তার ফোন নম্বরও বন্ধ। এরপর থেকেই গ্রাহকদের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয় এবং অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি গ্রাহকের টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন।

বিক্ষুব্ধ জনতা ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট আউটলেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।

অভিযোগ উঠেছে, নাইম ভুয়া রসিদ, মিথ্যা হিসাব এবং বিদ্যুৎ বিলের ভূয়া সিল ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে টাকা আত্মসাৎ করে আসছিলেন। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে আছেন দিনমজুর, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও প্রবাসী শ্রমিক, যাদের সঞ্চিত অর্থ ছিল ভবিষ্যতের একমাত্র ভরসা।

একজন ভুক্তভোগী জানান, আমি ৫০ হাজার টাকা ডিপিএস করেছি বলে ভেবেছিলাম, এখন শুনছি আমার নামে কিছুই খোলা হয়নি।

আরেকজন বলেন, মেয়ের বিয়ের জন্য এক লাখ টাকা জমা করেছিলাম, সব শেষ। বিদ্যুৎ বিলও দিয়েছিলাম, কিন্তু তা অফিসে জমা পড়েনি।

এজেন্ট নাইমের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে, তিনি গ্রাহকের অর্থ ব্যবহার করে নিজের নামে একটি মাল্টিপারপাস ব্যবসা খুলেছেন।

ফোনে যোগাযোগ করা হলে নাইম বলেন, আমি শিগগিরই টাকা ফেরত দেব, বলে ফোন কেটে দেন।

ডাচ্ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রথমে নাইমের পক্ষে সাফাই গাইলেও পরে অভিযোগ পেয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানার ওসি নাজমুল নিশাত বলেন, এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই ঘটনায় কোটি টাকার বেশি অর্থ আত্মসাৎ হওয়ায় ব্যাংক এজেন্ট ব্যবস্থার স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও তদারকির অভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

গ্রাহকরা দ্রুত আইনি পদক্ষেপ ও তাদের সঞ্চিত অর্থ ফেরতের দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্রুত পদক্ষেপেরও আহ্বান জানানো হয়েছে।