বাজেটে আবারও কালোটাকা সাদা করার সুযোগ, কর হার বাড়ল

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ২ জুন, ২০২৫, ১২:৩৩
বাজেটে আবারও কালোটাকা সাদা করার সুযোগ, কর হার বাড়ল

অবৈধ অর্থ বৈধ করার সুযোগ আবারও চালু রাখলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। আজ সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে তিনি এই প্রস্তাব দেন। ফ্ল্যাট, প্লট বা ভবন নির্মাণের মাধ্যমে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত থাকছে, তবে এবার এলাকাভেদে কর হার কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানিয়েছে, নির্ধারিত হারে কর পরিশোধ করলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অর্থের উৎস ব্যাখ্যার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। অর্থাৎ, নির্ধারিত পরিমাণ কর দিলেই ওই অর্থকে বৈধ হিসেবে গণ্য করা হবে।

ঢাকার অভিজাত এলাকা যেমন গুলশান, বনানী, বারিধারা, মতিঝিল ও দিলকুশায় ২ হাজার বর্গফুটের বেশি অ্যাপার্টমেন্টে প্রতি বর্গফুটে কর নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার টাকা। একই এলাকায় এর চেয়ে ছোট আয়তনের ক্ষেত্রে কর প্রতি বর্গফুটে ১ হাজার ৮০০ টাকা। ধানমন্ডি, উত্তরা, বসুন্ধরা, লালমাটিয়াসহ ঢাকার অন্যান্য অভিজাত এলাকায় বড় অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে কর হবে প্রতি বর্গফুটে ১,৮০০ টাকা, ছোট অ্যাপার্টমেন্টে ১,৫০০ টাকা।

এছাড়া ঢাকার বাইরে জেলা শহরগুলোতে প্রতি বর্গফুটে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা এবং গ্রামাঞ্চলে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কর নির্ধারণ করা হয়েছে। ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রেও এলাকাভেদে প্রতি বর্গফুটে ৫০ থেকে ৯০০ টাকা কর প্রস্তাব করা হয়েছে।

তবে বাজেটে উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ বা অবৈধ উৎস থেকে আসা আয়ের ক্ষেত্রে এই সুবিধা প্রযোজ্য হবে না।

এর আগে শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে ব্যাপক সমালোচনার মুখে অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর সেই সুবিধা বাতিল করে। এবার আবারও নতুন করহারে এই সুবিধা ফিরিয়ে আনলো অন্তর্বর্তী সরকার।

অর্থনীতিবিদদের একটি বড় অংশ বরাবরই কালোটাকা সাদা করার এই সুযোগকে ‘নৈতিকতা-বিরোধী’ ও ‘সৎ করদাতার প্রতি অবিচার’ বলে অভিহিত করেছেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার প্রথমে সুবিধাটি বাতিল করলেও এবারের বাজেটে তা পুনঃপ্রতিষ্ঠা পেল।

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, বিগত বছরগুলোতে কালোটাকা সাদা করার সুযোগে প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা বৈধ হয়েছে। তবে সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে বিশেষ সুযোগ দেওয়া হলেও কেউ সেই সুযোগ গ্রহণ করেননি।