বিএনপি সমর্থকের মিলে হামলা, যুবলীগ-ছাত্রলীগসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা :
প্রকাশ: ১ জুন, ২০২৫, ২:১৯
বিএনপি সমর্থকের মিলে হামলা, যুবলীগ-ছাত্রলীগসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার নন্দনপুর বাজারে চাঁদা না দেওয়ায় বিএনপি সমর্থক এক ব্যবসায়ীর রাইচ মিলে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় যুবলীগ নেতা ও ইউপি সদস্য ইসরাফিল প্রামানিক এবং ছাত্রলীগ নেতা মিঠুসহ ৩২ জনকে আসামি করে সাঁথিয়া থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম পলাশ।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, সম্প্রতি ইসরাফিল প্রামানিক তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন রফিকুলের কাছে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ২৬ মে সন্ধ্যায় ইসরাফিল, মিঠুসহ তাদের দলবল নিয়ে রফিকুলের মালিকানাধীন ‘বিশ্বাস রাইচ মিলে’ গিয়ে আবারও চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে তারা মিলের সামনে থাকা তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে এবং মিলের টিনের বেড়া কুপিয়ে ভাঙচুর চালায়। বাধা দিতে গেলে চারজনকে পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে ককটেল বিস্ফোরণের মাধ্যমে আতঙ্ক ছড়িয়ে মিল থেকে চার বস্তা সরিষা ও নগদ অর্থ লুট করা হয়। এতে প্রায় সাত লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি মামলায়।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত ইসরাফিল প্রামানিক ঢাকার পল্টন থানায় বিস্ফোরক মামলার ও সাঁথিয়া থানায় একটি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলাম বলেন, “ইসরাফিল মেম্বার সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ। তিন লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় সে আমার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছে। সে এখন জামায়াতের লোকদের সাথে চলাফেরা করছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”

এদিকে, ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় বণিক সমিতিও নিন্দা জানিয়েছে। নন্দনপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আলী মর্তুজা বলেন, “ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় পুরো বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। আমরা দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা দাবি করছি।”

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ইসরাফিল প্রামানিক অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা দাবি করেন, “ওইদিন আমার ভাই মিন্টুর দোকানে রফিকুলের লোকজন হামলা চালায়। পরে তারা নিজেরাই তাদের মিল ভেঙে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আমরাও থানায় পাল্টা মামলা করেছি।”

সাঁথিয়া থানার ওসি আনিছুর রহমান জানান, “উভয়পক্ষ থানায় পৃথক মামলা করেছে। রফিকুলের মামলায় ৩২ জন এবং মিন্টুর মামলায় ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”