বেতাগীতে বাঁধ ভাঙন: প্লাবনে ডুবছে কৃষকের স্বপ্ন

টানা ভারি বৃষ্টিপাত এবং বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে বরগুনার বেতাগীতে বিষখালী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে জোয়ারের প্রবল পানির চাপে উপজেলার ছোট মোকামিয়া এলাকার প্রায় দেড় শ মিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়। এতে মুহূর্তেই নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ফসলি জমি, মাছের ঘের ও পুকুর তলিয়ে গেছে। হঠাৎ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষিজ ফসল ও মৎস্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (২৭ মে) সৃষ্ট লঘুচাপটি গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর নিম্নচাপে রূপ নেয়। এর প্রভাবে গতকাল ভোর থেকেই বেতাগীসহ দক্ষিণাঞ্চলে শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি, সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়া। ফুঁসে ওঠে বিষখালী নদীর পানি। দুপুরের জোয়ারে নদীর পানির অস্বাভাবিক চাপ সহ্য করতে না পেরেই ছোট মোকামিয়ার বেড়িবাঁধটি ভেঙে যায়।
বেড়িবাঁধ ভাঙনের ফলে বেতাগীর নিম্নাঞ্চল ১ থেকে ৩ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত গ্রামের পর গ্রাম পানিতে তলিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, টানা বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে সবজি এবং অন্যান্য কৃষিজ ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। ছোট মোকামিয়া ইউনিয়নের সুশান্ত কুমার গাইন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢোকায় ফসলের মাঠ তলিয়ে গেছে। পুকুরের মাছও ভেসে গেছে। তিনি আশঙ্কা করছেন, ফসলি জমি বেশিদিন তলিয়ে থাকলে বীজতলা ও রোপা আউশসহ অন্যান্য ফসলে পচন ধরবে।
বিবিচিনি এলাকার মৎস্য চাষি নুরুজ্জামান এবং বেতাগী সদর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুরা গ্রামের আব্দুর রহমানও জানান, তাদের পুকুর ও ঘেরের মাছ বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। আব্দুর রহমান আরও বলেন, ঝোড়ো বাতাসে তার লাগানো পেঁপে ও কলাগাছ ভেঙে পড়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানজিলা আহমেদ জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করে ক্ষতির তালিকা তৈরি করা হবে এবং কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির গাজী দাবি করেন, এই উপজেলায় এখন পর্যন্ত তেমন বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে তিনি বলেন, কৃষকের জমির ফসল বা মাছচাষিদের ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকলে তদন্ত করে তাদের সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন