মমতাজের রিমান্ড শুনানিতে হট্টগোল, আইনজীবীদের প্রতিবাদ

জুলাই মাসের অভ্যুত্থান সংক্রান্ত হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক সংসদ সদস্য ও সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগমের রিমান্ড শুনানিকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে হট্টগোলের ঘটনা ঘটে।
পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) সোমবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে মমতাজকে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করা হলে সেখানে আইনজীবী, সাংবাদিক ও উপস্থিত জনতার ভিড়ে কোর্টরুম পরিপূর্ণ হয়ে যায়। তখনই শুরু হয় বিশৃঙ্খলা।
বিচারপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা রক্ষায় আদালতে উপস্থিত ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী আইনজীবীদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের আসামির সঙ্গে কথা না বলা বা ছবি না তোলার আহ্বান জানান তিনি।
পিপির বক্তব্যের সময় মমতাজের হেলমেট ও মাস্ক খুলে তার মুখ প্রকাশ করা হয়। এরপর রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ মমতাজের অতীত রাজনৈতিক ভূমিকা ও সংসদে দেওয়া বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে।
ওমর ফারুক বলেন, “জনগণের ভালোবাসা ব্যবহার করে তিনি ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। সংসদে বসে গান গেয়ে কোটি টাকার অপচয় করেছেন। অথচ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ঘাটতির কারণে বাস্তবে কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেননি।”
তিনি আরও বলেন, “সংসদে যেখানে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতারাও সংযত বক্তব্য দেন, সেখানে মমতাজ খালেদা জিয়াকে অপমান করেছেন। মানিকগঞ্জের মানুষ নম্র-ভদ্র, অথচ তাদের ভোট ছিনিয়ে নিয়েছেন তিনি।”
রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী খুঁজে পেতে বিলম্ব ঘটে। পরে মমতাজ তাকে শনাক্ত করে ওকালতনামায় সই করেন। তবে আইনজীবী জানান, তিনি কোনো বক্তব্য দেবেন না।
এরপর বিচারক মমতাজের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শুনানির সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বিষণ্ন মুখে রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য শুনতে দেখা যায় মমতাজকে।
রিমান্ড আদেশের পর কিছু আইনজীবী দাবি করেন, মমতাজকে লিফটে নয়, সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামাতে হবে, যেমনটি অতীতে বিএনপির অনেক নেতার ক্ষেত্রে করা হয়েছে। এ দাবিতে তারা আদালতের গেটের সামনে অবস্থান নেন।
পুলিশের প্রসিকিউশন শাখার ইন্সপেক্টর আদালতে অনুরোধ জানান, পরিস্থিতি বিবেচনায় মমতাজকে কিছু সময় কাঠগড়ায় রাখা হোক। আদালত সম্মতি দিলে প্রায় ২১ মিনিট তাকে সেখানে রাখা হয়। এসময় কয়েকজন আইনজীবী চিৎকার করে বলতে থাকেন, “মমতাজ বিচারককে গান শোনাবেন।”
এতে বিচারক আইনজীবীদের আদালত ত্যাগের নির্দেশ দেন। পরে অতিরিক্ত নিরাপত্তায় মমতাজকে লিফটে করে হাজতখানায় পাঠানো হয়। নিচতলায়ও কিছু সময় আইনজীবীদের অবস্থান করতে দেখা যায়।
আপনার মতামত লিখুন