মাদকবিরোধী পোস্ট দেওয়ার জেরে সুনামগঞ্জে কলেজ ছাত্রীর ঘরে আগুন

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ১৩ মে, ২০২৫, ১০:৪৩
মাদকবিরোধী পোস্ট দেওয়ার জেরে সুনামগঞ্জে কলেজ ছাত্রীর ঘরে আগুন

সুনামগঞ্জ শহরতলী ওয়েজখালীর বিপরীতে লক্ষণশ্রী গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা এক কলেজছাত্রীর ফেসবুকে মাদকবিরোধী পোস্ট দেওয়ার জেরে তার ঘরে অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগ উঠেছে। আগুনে ঘরের একাংশ পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় আতঙ্কে আছেন ওই ছাত্রীর পরিবার।

সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার পুলিশ।

ভুক্তভোগী সাজমিন আক্তার সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার পিতা শফিক মিয়া সুনামগঞ্জ শহরের ওয়েজখালীর একটি কাপড়ের দোকানের কর্মচারী।

ওই ছাত্রীর পরিবারের দাবি, প্রতিদিনের ন্যায় তারা রাত ১১টায় খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে রাত প্রায় ৩টার দিকে হঠাৎ করে তারা দেখতে পান তাদের ঘরে আগুন জ্বলছে। চিৎকার শুনে গ্রামের বিল্লাল হোসেন, সফিকুল ইসলাম, সাহেল আহমদসহ আরও কয়েকজন এগিয়ে আসেন ও পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। ততক্ষণে ঘরের বাইরের অংশসহ টিন ও মালামাল পুড়ে যায়। কলেজছাত্রীর পরিবারের দাবি, রাতে অন্ধকারে ডিজেল বা পেট্রোল জাতীয় কোনো দাহ্য পদার্থ ছিটিয়ে তাদের ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

সাজমিন আক্তার বলেন, গ্রামের মাদকসেবীদের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। ফেসবুক গ্রুপ সুনামগঞ্জ হেল্পলাইন এ গ্রামের মাদকসেবীদের নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছিলাম। এরপর থেকেই নানাভাবে বিরক্ত করছে ও আমার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে একই গ্রামের নূর হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান। সে এলাকায় মাদকসেবী ও সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। তার ভয়ে কেউ কথা বলতে চায় না। আমাদের ধারণা সেই ঘরে আগুন দিতে পারে। আমাদের ভয় করে, বাবা রাতে দেরিতে বাড়ি ফেরেন। যদি তাকেও কিছু করে ফেলে।

সাজমিনের বাবা শফিক মিয়া বলেন, মেহেদী গতকাল বিকেলে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে গ্রামের একদিক থেকে অন্যদিকে প্রকাশ্যে ঘুরেছে ও মানুষকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে। আমরা ভয়ে কিছু বলতে চাই না। কয়েক দিন আগে সুনামগঞ্জ শহরে মাদকসেবীকে প্রতিবাদ করতে গিয়ে একজন খুন হয়েছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মেহেদী হাসানের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। দুপুরে বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার বোন ফারজানা জান্নাত বলেন, এদের (সাজমিন) সঙ্গে গতকাল আমাদের ঝামেলা হয়েছে। আমার ভাই তাদের বাড়িতে আগুন লাগায়নি। আগুন লাগানোর ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না।

সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন, আমি সুনামগঞ্জের বাহিরে আছি। খবর পেয়ে ওই কলেজছাত্রীর বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। বিরোধকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।