যশোরে নারী কেলেঙ্কারী: ওসি প্রত্যাহার ও বিএনপি নেতা বরখাস্ত

যশোর প্রতিনিধি:
প্রকাশ: ৭ জুলাই, ২০২৫, ৫:৪৪
যশোরে নারী কেলেঙ্কারী: ওসি প্রত্যাহার ও বিএনপি নেতা বরখাস্ত

যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) রেস্ট হাউসে স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীকে নিয়ে অবস্থানের সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা ও তার সহযোগীদের হাতেনাতে ধরা পড়েন ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম। তাদের আটকে চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা গোলাম হাসান সনির বিরুদ্ধে। এ সংক্রান্ত ভিডিও ফাঁসের পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সোমবার সকালে ওসি সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ।

ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মনজুর মোর্শেদ সাংবাদিকদের জানান, ওসি সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে, যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য গোলাম হাসান সনিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার রাতে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহদপ্তর সম্পাদক ওসমান গণি সাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাজেদুর রহমান সাগর।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার সুস্পৃষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যশোর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম হাসান সনিকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিস্কার করা হলো। দলের নেতাকর্মীদের তার সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ না করার নির্দেশনা প্রদান করা হলো।

এই বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাজেদুর রহমান সাগর জানান, কেন্দ্রীয় কমিটি সনিকে বহিস্কার করেছে। দলের যে কেউ দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করলে দলে তাঁর জায়গা হবে না।

জানা যায়, গত ৩০ জুন সন্ধ্যায় যশোর পাউবোর পুরাতন রেস্ট হাউসের ‘কপোতাক্ষ’ কক্ষে ওঠেন মহেশপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করেন তিনি।

খবর পেয়ে যশোর জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম হাসান সনি দলবল নিয়ে সেখানে যান। রেস্ট হাউসের দরজায় ধাক্কাধাক্কির এক পর্যায়ে ওসি সাইফুল বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করলে স্বেচ্ছাসবকদল ও ছাত্রদল নেতারা তাকে টেনেহিঁচড়ে আবার কক্ষে নিয়ে যান। এ সময় সেখানে বাকবিতণ্ডা, ধস্তাধস্তি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।

রেস্ট হাউসের কেয়ারটেকার মিজানুর রহমান জানান, ওসি সাইফুল নিজেই এসে স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীকে নিয়ে কক্ষ নেন। পরে কিছু লোক এসে দরজায় ধাক্কাধাক্কি করেন এবং ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।

যদিও ওসি সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন, কোনো অনৈতিক কিছু ঘটেনি। তিনি ব্যক্তিগত কাজে যশোরে গিয়েছিলো। নারী বন্ধুটিকে সঙ্গে নিয়ে রেস্ট হাউসে অবস্থান করছিলেন। কিছু ছাত্রনেতা এসে স্বাভাবিক কথাবার্তা বলে চলে যান। তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা চলছে।