যশোরে বিএনপি কর্মী লিটন হত্যা: চার ঘণ্টার মধ্যে আটক ৪

যশোরের শার্শা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে চায়ের দোকানে বসে থাকা অবস্থায় সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের হামলায় নিহত হয়েছেন লিটন হোসেন (৩০) নামে এক বিএনপি কর্মী। মঙ্গলবার (১১ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। নিহত লিটন দুর্গাপুর গ্রামের আজগর আলীর ছেলে।
হত্যাকাণ্ডের চার ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারভুক্ত দুইজনসহ মোট চারজনকে আটক করেছে। আটককৃতদের মধ্যে একজন স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম রবিউল ইসলাম।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ঘটনার সময় লিটন একটি চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলেন। এ সময় একই এলাকার সেলিম ও রমজানসহ কয়েকজন দুর্বৃত্ত পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। লিটনের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বাবা আজগর আলী অভিযোগ করে বলেন, “আমার ছেলে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থিত নেতা আঃ মোমিন, সেলিম হোসেন ও রমজান আলীর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ছিল। এর আগেও তারা লিটনকে মারধর করেছে। ঈদের আগের দিনও তাদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। রাজনৈতিক শত্রুতার জেরেই আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে।”
ঘটনার পরপরই নিহতের বাবা বাদী হয়ে শার্শা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় মোট ১৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুর্গাপুরের আজগার আলী (৩২) ও শমসের আলী (৪৫) এজাহারভুক্ত আসামি। এছাড়া সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে সামসুল হক (৫২) এবং দুর্গাপুর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আব্দুল হক মিয়া (৫৫)-কে।
ওসি কেএম রবিউল ইসলাম বলেন, “হত্যাকাণ্ডের মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যেই আমরা চারজনকে গ্রেপ্তার করেছি। তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।”
এ মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, সেলিম মিয়া, রমজান আলী, মোমিন মিয়া, কামাল হোসেন, মরজেন আলী, শামীম মিয়া, প্রবাল মিয়া, গোলাম মোস্তফা (খামারপাড়া), শামসুর রহমান (পারুইখুপি), আলী আজম জুয়েল (শিকারপুর), শফি উদ্দিন, আনোয়ার মিয়া, রিপন মিয়া, আহম্মেদ আলী ও হানিফ।
শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লিটন বলেন, “নিহত লিটন আমাদের দলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। রাজনৈতিক বিরোধের কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগপন্থী সন্ত্রাসীরা তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
আপনার মতামত লিখুন