যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কে ক্ষুব্ধ লুলা: ব্রাজিল কারও অভিভাবকত্ব মেনে নেবে না

ব্রাজিল থেকে আমদানি হওয়া সব পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই ঘোষণার পর কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তিনি বলেন, ব্রাজিল একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় বহিরাগত হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) ট্রাম্পের প্রকাশিত বিবৃতির জবাবে লুলা এক পোস্টে বলেন, ব্রাজিল একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশ। আমরা কোনো ধরনের অভিভাবকত্ব মেনে নেব না। যারা অভ্যুত্থান ঘটাতে চেয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে বিচার হবে এবং সে বিচার পরিচালনা করবে কেবল ব্রাজিলের নিজস্ব আদালত। আমাদের জাতীয় প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা নিয়ে কোনো আপস হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্রাজিলের বাণিজ্য নিয়ে ট্রাম্প যে ভারসাম্যহীনতার অভিযোগ তুলেছেন, সেটিকেও মিথ্যা দাবি বলে উল্লেখ করেছেন লুলা। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্র ব্রাজিলের সঙ্গে পণ্য ও সেবার বাণিজ্যে ৪১০ বিলিয়ন ডলারের উদ্বৃত্ত দেখিয়েছে। তাই যেকোনো একতরফা শুল্ক বৃদ্ধিকে আমরা ব্রাজিলের অর্থনৈতিক স্বার্থের বিরুদ্ধে বলে মনে করি এবং তা আমাদের পারস্পরিক আইনের আলোকে মোকাবিলা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, সার্বভৌমত্ব, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও জনগণের স্বার্থ রক্ষা এই নীতিতেই আমরা বিশ্ব রাজনীতিতে চলি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা মাথা নত করব না।
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার চিঠিতে দাবি করেন, ব্রাজিলের আদালত সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে যে বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে, তা ‘মৌলিক মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হুমকি’। ট্রাম্প বলেন, আমরা নির্বাচন নিয়ে অন্যায় আচরণ এবং মতপ্রকাশের অধিকারে হস্তক্ষেপ সহ্য করব না। এই শুল্ক ব্যবস্থা তারই প্রতিক্রিয়া।
উল্লেখ্য, সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো বর্তমানে লুলার সরকারবিরোধী অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্রের মামলায় অভিযুক্ত হয়ে বিচারের মুখোমুখি।
এই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প ও লুলার মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা কয়েক দিন ধরেই বেড়ে চলেছে, যা এবার শুল্ক আরোপের মাধ্যমে আরও প্রকট হয়ে উঠেছে।
আপনার মতামত লিখুন