রমনার বটমূলে গাজায় নিহতদের স্মরণ, শোভাযাত্রায় মুখর রাজধানী

মনিরুল ইসলাম, ঢাকা: বাংলা ১৪৩২ সালের প্রথম দিনে রাজধানীর রমনার বটমূলে ছায়ানটের আয়োজনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়েছে।
সোমবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগমুহূর্তে ছায়ানটের শিল্পী ও উপস্থিত দর্শনার্থীরা একযোগে দাঁড়িয়ে এই নীরবতা পালন করেন। এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয় এ বছরের ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান।
নীরবতা পালনের আগে ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি ডা. সারওয়ার আলী বলেন, “গাজায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় চলছে। আমরা এই গণহত্যা, বিশেষ করে শিশু হত্যার তীব্র নিন্দা জানাই। ফিলিস্তিনের মানুষ তাদের ভূমির জন্য যে সংগ্রাম করছেন, আমরা তার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।”
এবার ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান সাজানো হয় “আমার মুক্তি আলোয় আলোয়” প্রতিপাদ্য নিয়ে। আলো, প্রকৃতি, মানুষ ও দেশপ্রেমের গান দিয়ে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত করে তোলা হয়।
অন্যদিকে, ঢাবির চারুকলা অনুষদের সামনে সকাল ৯টায় শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা। হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে আয়োজিত এ শোভাযাত্রায় এবার যোগ হয় ব্যতিক্রমী কিছু মোটিফ ও বার্তা।
শোভাযাত্রায় দেখা যায় ফ্যাসিবাদের প্রতীকী মুখাবয়ব, সঙ্গে ছিল জুলাই আন্দোলনে নিহত মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধকে স্মরণ করে তৈরি ‘পানি লাগবে পানি’ শিল্পকর্ম।
চারুকলা প্রাঙ্গণসহ পুরো এলাকাজুড়ে উৎসবের আমেজে রঙিন হয়ে ওঠে রমনা, টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকা। ভোর থেকেই জমতে থাকে জনস্রোত।
শোভাযাত্রায় অংশ নেন চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীসহ নানা বয়সী মানুষ। উপস্থিত ছিলেন অনেক বিদেশি নাগরিকও।
গ্রামীণ জীবন, প্রকৃতিনির্ভর মানুষ ও তাদের সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা হয় মুখোশ, পাপেট, বাঁশের তৈরি বাঘ, পাখি ও মাছসহ নানা বিশালাকৃতির শিল্পকর্মের মাধ্যমে। ছিল শেখ হাসিনার মুখাবয়ব ও মুগ্ধর স্মরণে তৈরি বিশেষ শিল্পকর্মও।
এভাবেই উৎসব ও প্রতিবাদের সম্মিলনে নতুন বছরকে স্বাগত জানাল রাজধানীবাসী।
আপনার মতামত লিখুন