রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ‘পোষ্য কোটা’ ইস্যু ঘিরে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চতুর্থ দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছেন। আগের দিনগুলোতে অর্ধদিবস কর্মবিরতি থাকলেও এদিন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হয়। এর ফলে পরীক্ষা ও জরুরি সেবা ছাড়া অধিকাংশ বিভাগ ও দপ্তরের কার্যক্রম বন্ধ থাকে। দাবি পূরণ না হলে ভবিষ্যতে প্রশাসনিক কার্যক্রম অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা।
অন্যদিকে, দুপুর ১২টায় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তাঁরা ‘পোষ্য কোটা’কে অযৌক্তিক ও অন্যায্য আখ্যা দিয়ে সতর্ক করেন—এটি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হলে তা প্রতিহত করা হবে।
প্রশাসনিক ভবনের ফটকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উর্দু বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দাবির মধ্যে কোনো অস্পষ্টতা নেই। আমরা কোটার দাবিতে আন্দোলন করছি না, বরং প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা আদায়ের জন্য দাঁড়িয়েছি। প্রশাসনকে ব্ল্যাকমেইল করা কিংবা শিক্ষার্থীদের অধিকার খর্ব করার উদ্দেশ্য আমাদের নেই।’
অফিসার সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, ‘দাবি পূরণ না হলে আন্দোলনের পরিধি আরও বিস্তৃত হবে। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রশাসনিক কার্যক্রম একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা শিক্ষকদের এই আন্দোলনকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন।
তাঁর ভাষায়,‘পোষ্য কোটা একটি মীমাংসিত বিষয়, যা বাতিল হয়েছে। এটি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা মানেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘাত তৈরি করা। রাকসুর নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সময় জামায়াত-বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করার চেষ্টা করছে—এটিই আসলে বড় ষড়যন্ত্র।’
শিক্ষার্থীরাও এই আন্দোলনের বিরোধিতা করেছেন। দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুল্লাহ মুহিব বলেন, ‘শিক্ষক-কর্মকর্তারা নানা সুবিধা ভোগ করেও এটিকে অধিকার বলে দাবি করছেন। অথচ বাস্তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা উচ্চ নম্বর পেয়ে ভর্তি হতে না পারলেও তাঁদের সন্তানরা কম নম্বরে ভর্তি হয়ে যায়। এটি কোনোভাবেই ন্যায্য হতে পারে না।’
পোষ্য কোটা বাতিল হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়ে টানাপোড়েন চলমান থাকলেও এবার সরাসরি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়েছেন। পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে, তা এখন সবার নজরে।

