সংলাপ থেকে সরে দাঁড়ালেও আবার ফিরছে জামায়াতে ইসলামী

বিশেষ প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ১৭ জুন, ২০২৫, ৪:৩৫
সংলাপ থেকে সরে দাঁড়ালেও আবার ফিরছে জামায়াতে ইসলামী

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের দ্বিতীয় দফায় প্রথম দিন অংশ না নিলেও আগামীকাল বুধবার জামায়াতে ইসলামী যোগ দেবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংলাপের মধ্যবর্তী সময় সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।

সংলাপে জামায়াতের অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জামায়াতে ইসলামী আগামীকাল যোগ দেবে। তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। একদিন না আসতেই পারে। আগামীকাল ভালোভাবে থাকবে।” কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কারণ জানি না, তবে তারা আসবে।”

তবে জামায়াতের পক্ষ থেকে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়নি। দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বিকালে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। এর আগে সকালে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা অন প্রোটেস্ট আজকের বৈঠকে যাইনি।” পরদিন বৈঠকে যোগ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তখন তিনি বলেন, “এটা এখনই বলতে পারছি না। আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।”

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মূলতবি সংলাপে ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। তবে জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।

জানা গেছে, লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক ও পরবর্তী যৌথ বিবৃতির প্রতিবাদে সংলাপ ‘বয়কট’ করে জামায়াত। সকালে দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, “দ্বিতীয় দফার সংলাপে আমরা যোগ দিচ্ছি না।”

বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমদের পাশের আসনটি জামায়াতের প্রতিনিধি সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের জন্য সংরক্ষিত থাকলেও তা খালি ছিল।

বিরতির সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার সাংবাদিকদের বলেন, “জামায়াতে ইসলামী প্রতীকীভাবে বয়কট করেছে।” লন্ডনের বৈঠকের কারণে কি তারা সংলাপে আসেনি—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আপনারা বুঝে নিন।”

প্রথম দিনের সংলাপ শেষে প্রেস সচিব শফিকুল আলমকে প্রশ্ন করা হয়, লন্ডনে ইউনূস-তারেক বৈঠকের কারণে জামায়াত সংলাপে অংশ নেয়নি বলে দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে—এ বিষয়ে তার বক্তব্য কী? তিনি বলেন, “আমরা এমন কিছু জানি না।”

বিএনপির প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষপাতিত্ব নিয়ে জামায়াত ও এনসিপির অভিযোগের জবাবে শফিকুল বলেন, “আমরা মনে করি, আমরা সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা বজায় রেখেছি। জুলাই গণ-আন্দোলনে যারা অংশ নিয়েছে, সবাইকেই আমরা অংশীজন হিসেবে বিবেচনা করি। কাউকে আলাদাভাবে দেখা হয়নি।”

তিনি বলেন, “বর্তমান সরকার সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ। আন্দোলনে যুক্ত দলগুলোকে সমান গুরুত্ব দিচ্ছে।”

এদিকে ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, “সরকারের পক্ষ থেকে জামায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা আগামীকাল সংলাপে যোগ দেবে।”