সর্বশেষ জাতীয় তিন নির্বাচনের অনিয়ম তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ২৬ জুন, ২০২৫, ৪:৫৭
সর্বশেষ জাতীয় তিন নির্বাচনের অনিয়ম তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি

২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংঘটিত অনিয়ম, দুর্নীতি ও প্রশাসনিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধার এবং ভবিষ্যতের নির্বাচনগুলোকে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামীম হাসনাইনকে সভাপতি করে গঠিত এই কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, সাবেক অতিরিক্ত সচিব (গ্রেড–১) শামীম আল মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপণ, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী ব্যারিস্টার তাজরিয়ান আকরাম হোসাইন এবং নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল আলীম।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, উল্লিখিত তিনটি নির্বাচন নিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। এসব নির্বাচনে ভোটারদের অধিকার হরণ, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা হারানো এবং ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে নির্বাচনী ব্যবস্থা ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। এতে দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মৌলিক মানবাধিকার বিপন্ন হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হয়।

তদন্ত কমিটিকে এসব নির্বাচনে অংশ নেওয়া পর্যবেক্ষক সংস্থা, দেশি-বিদেশি তদারকি প্রতিষ্ঠান, নাগরিক সংগঠন এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে, তৎকালীন নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ভূমিকা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। এসব নির্বাচনে ভোটারদের অধিকার রক্ষায় রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে প্রতিবন্ধকতা এবং ক্ষমতাসীনদের ভূমিকা বিশ্লেষণ করতে হবে কমিটিকে।

কমিটি নির্বাচনী অনিয়ম ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের দায়দায়িত্ব নির্ধারণ করবে এবং ভবিষ্যতের সব নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করতে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, আইন ও বিধিবিধান সংস্কারের বিষয়ে সুপারিশ করবে। প্রয়োজনে কমিটি যেকোনো দপ্তর থেকে দলিল দস্তাবেজ সংগ্রহ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। কমিটি চাইলে সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।

কমিটিকে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সরকারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কমিটিকে প্রশাসনিক সহায়তা এবং নির্বাচন কমিশন তথ্য ও লজিস্টিক সহায়তা প্রদান করবে।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার দেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ব্যবস্থার ভিত্তি গঠনের প্রয়াস নিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।