সাতক্ষীরায় অসময়ের তরমুজ চাষে বাম্পার ফলন

মীর খায়রুল আলম, সাতক্ষীরা:
প্রকাশ: ৯ আগস্ট, ২০২৫, ৩:১০
সাতক্ষীরায় অসময়ের তরমুজ চাষে বাম্পার ফলন

সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলায় মৎস্য ঘেরের ভেঁড়িতে পতিত জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হওয়া অফসিজন তরমুজ চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। অল্প খরচে সহজেই তরমুজ উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। বর্তমানে এই চাষ নিয়ে কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে।

দেবহাটা উপজেলা কৃষি দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবছর প্রায় ৫০ জন কৃষক এই তরমুজ চাষে যুক্ত হয়েছেন। মৎস্য ঘেরের ভেড়িতে আলাদা জমির প্রয়োজন না হওয়ায় সহজেই চাষ সম্ভব হচ্ছে। দ্রুত লাভের সম্ভাবনা থাকায় প্রতিবছর চাষের পরিমাণ বাড়ছে।

চলতি বছরে উপজেলার তিনটি প্রদর্শনীতে ইতোমধ্যে বাম্পার ফলন পাওয়া গেছে। এছাড়া কৃষি অধিদপ্তর ৫০ জন কৃষকের মাঝে উন্নত জাতের তরমুজের বীজ বিতরণ করেছে। এসব জাতের মধ্যে রয়েছে সুপ্রিম হানি, তৃপ্তি, ব্ল্যাক বেবি, সুগারকুইন ও বাংলা লিংক।

প্রতি বিঘায় ১০০ থেকে ১২০ গ্রাম বীজ রোপণ করা হয়। অপসিজন তরমুজ বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অনেক কৃষক নিজেদের ঘেরের জমিতেও তরমুজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

টিকেট গ্রামের তরমুজ চাষি বিশ্বনাথ টাপালী জানান, লোনা পানিতে টিউবওল থেকে পানি এনে নিয়মিত পরিচর্যার মাধ্যমে রোগবালাই নিয়ন্ত্রণ করে তরমুজ ফলানো হয়।

তিনি বলেন, অসময়ের এই তরমুজের প্রথম চালান ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, আর দুটি বারের ফলন আরও নেয়া যাবে। আমি মোট ৬ বিঘা জমির ভেড়িতে চাষ করেছি এবং আশা করছি পুরো বছরজুড়ে জমির খরচ উঠে যাবে।

অন্য কৃষক আবুল কাশেম বলেন, এই তরমুজ দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি স্বাদেও অনেক মিষ্টি। বাজারে এর চাহিদাও অনেক বেশি। আশা করছি প্রায় দুই লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করবো।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা মোস্তাক আহম্মেদ জানান, দেবহাটায় নোনাতে সোনার খোঁজে আমরা মৎস্য ঘের বা পতিত জমিকে কৃষির আওতায় আনার চেষ্টা করছি। প্রথমে আগ্রহ কম ছিল, কিন্তু এখন কৃষকদের মধ্যে তরমুজ চাষ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান বলেন, যেখানে আগে মৎস্য ঘেরের ভেড়ি ছিল না, সেগুলো চাষের উপযোগী করা হয়েছে। বিশেষ করে সবজি ও অসময়ের তরমুজ চাষে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। আমরা বীজ, সার সরবরাহ এবং নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের উৎসাহিত করছি। এতে করে উপজেলায় কৃষির আবাদ ও অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটছে।