সালমান এফ রহমানসহ তিনজন আজীবন পুঁজিবাজারে অবাঞ্ছিত

বিশেষ প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ৩০ জুলাই, ২০২৫, ৫:৪৯
সালমান এফ রহমানসহ তিনজন আজীবন পুঁজিবাজারে অবাঞ্ছিত

আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস-চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, তার ছেলে ও ব্যাংকের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে আজীবনের জন্য পুঁজিবাজারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বিএসইসি। বুধবার (৩০ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ৪ জুন বিএসইসির ৮৭১তম কমিশন সভায় “আইএফআইসি গ্যারান্টেড শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ড” নামে ১,৫০০ কোটি টাকার বন্ডের অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে ১,০০০ কোটি টাকা ছিল ইস্যু মূল্য। একই বছরের ১২ জুলাই বন্ডটির সম্মতিপত্র ইস্যু করা হয়।

এই বন্ড ইস্যু করে মাত্র কয়েক মাস আগে গঠিত রিয়েল এস্টেট কোম্পানি শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেড (এসটিএল)। প্রতিষ্ঠানটি ২০২৩ সালের ২ মার্চ গঠিত হয় এবং ১১ এপ্রিল বন্ড ইস্যুর আবেদন করে। অনুমোদিত মূলধন ছিল ৫০০ কোটি টাকা, পরিশোধিত মূলধন ৩৩৫ কোটি, যার মধ্যে চার দিনের ব্যবধানে ২৪৮ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়—যা কমিশনের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।

এই বন্ডে জামিনদার ছিল আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি, অ্যাডভাইজার ও অ্যারেঞ্জার ছিল আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড, ট্রাস্টি ছিল সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ক্রেডিট রেটিং করেছিল ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড (ইসিআরএল), এবং নিরীক্ষক ছিল এম. জে. আবেদীন অ্যান্ড কো. অথচ বন্ডটি ইস্যু করে এসটিএল, কিন্তু বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে “আইএফআইসি আমার বন্ড” নামে প্রচার চালানো হয়—যা বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করে এবং ভুলভাবে আইএফআইসি ব্যাংকের বন্ড হিসেবে উপস্থাপন করে।

এই প্রতারণা নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিএসইসি, যার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়: সালমান এফ রহমানকে ১০০ কোটি টাকা জরিমানা এবং আজীবনের জন্য পুঁজিবাজারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে; আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমানকে ৫০ কোটি টাকা জরিমানা ও আজীবনের জন্য অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে; আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের তৎকালীন সিইও মো. ইমরান আহমেদকে পাঁচ বছরের জন্য পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে; এবং আইএফআইসি ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ আলম সারওয়ারের বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম নেওয়া হবে।

বিএসইসি জানিয়েছে, এই ঘটনার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে এবং পুঁজিবাজারে আস্থার প্রতি চরম অবহেলা দেখানো হয়েছে—যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।