রাজশাহীতে ঋণের দায়ে সিএনজি চালকের আত্মহত্যা

রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা কলেজ মোড় এলাকায় ঋণের বোঝা সহ্য করতে না পেরে শামসুদ্দিন (৩২) নামে এক সিএনজি চালক আত্মহত্যা করেছেন।
বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেলে রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা কলেজ মোড় এলাকার একটি ছাত্রাবাসের কক্ষে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পবা থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে মরদেহ উদ্ধার করেন।
নিহত শামসুদ্দিন তানোর থানার তালন্দ বাজার এলাকার সামাসপুর গ্রামের মৃত এমাদউদ্দীন মণ্ডলের ছেলে। তার ব্যবহৃত সিএনজি গাড়ির নম্বর রাজশাহী-ফ (১১-০১৪৩)। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, শামসুদ্দিন ঋণের চাপে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শিলা খাতুন পবা থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছেন।
পবা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা দরজা ভেঙে কক্ষে প্রবেশ করে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। ঘরটি ভেতর থেকে আটকানো ছিল। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুইটি বিষের বোতল ও একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ঋণের চাপেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে শিলা খাতুন বলেন, ব্যবসা ও সংসারের খরচ মেটাতে গিয়ে আমার স্বামী অনেক ঋণের বোঝায় পড়ে যায়। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে বাপের বাড়ি চলে এসেছি। এখানে তাকে একটি সিএনজি কিনে দিয়েছি। সংসার চালানোর জন্য আমিও টেক্সটাইল মিলে কাজ করি। এই ঋণের টাকা পরিশোধ করতে বাপের একটি জমি বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম নিয়েছি। এত কিছু করার পরেও সে আত্মহত্যা করেছে। এটা আমি মেনে নিতে পারছি না।
নওহাটা এলাকার একাধিক সিএনজি চালক জানান, শামসুদ্দিন সবসময় চিন্তিত থাকতেন। দিনে দিনে ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। তারা সরকারের কাছে নিহতের পরিবারের জন্য সহায়তার দাবি জানান।
আপনার মতামত লিখুন