হেগের কারাগারে থেকেও ফিলিপাইনের দাভাও শহরের মেয়র রদ্রিগো দুতার্তে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
প্রকাশ: ১৩ মে, ২০২৫, ১২:৪৮
হেগের কারাগারে থেকেও ফিলিপাইনের দাভাও শহরের মেয়র রদ্রিগো দুতার্তে

নেদারল্যান্ডসের হেগে বন্দি অবস্থাতেই ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর দাভাওয়ের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) নির্দেশে আটক রয়েছেন তিনি। তবে এখনো কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত না হওয়ায় তার প্রার্থিতা বাতিল হয়নি। ফলে ব্যালটে থাকা তার নামই আবার মেয়র পদে জয় এনে দিল।

দাভাও শহরের নেতৃত্ব দীর্ঘদিন ধরেই দুতার্তে পরিবারের হাতে। ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে প্রায় দুই দশক শহরটির মেয়র ছিলেন রদ্রিগো দুতার্তে। এবার নির্বাচনে জয়ী হলেও তার অনুপস্থিতিতে মেয়রের দায়িত্ব পালন করবেন তার ছোট ছেলে সেবাস্তিয়ান, যিনি ডেপুটি-মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। বড় ছেলে পাওলোও পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এমনকি পরিবারের নাতি-নাতনিরাও স্থানীয় বিভিন্ন পদে জয়লাভ করেছেন।

মধ্যবর্তী এই নির্বাচনে দুতার্তের দুই বিশ্বস্ত সহকারী—সাবেক পুলিশ প্রধান রোনাল্ড ‘বাটো’ দেলা রোসা এবং ক্রিস্টোফার ‘বং’ গো—আবারও সিনেট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তবে সবকিছুই প্রত্যাশিতভাবে ঘটেনি।

এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল ভাইস-প্রেসিডেন্ট সারা দুতার্তের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ। এখনো ভোট গণনা শেষ না হলেও তাকে অভিশংসনের মুখে পড়তে হতে পারে, কারণ সিনেট সদস্যদের নিয়ে গঠিত জুরি যদি তার বিরুদ্ধে ভোট দেয়, তবে তিনি আজীবনের জন্য রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ হতে পারেন। অথচ ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে তাকেই ভাবা হচ্ছিল।

দুতার্তে পরিবার ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ ‘বংবং’ মারকোস জুনিয়রের শিবির এখন একে অপরের প্রতিপক্ষ। একসময় মিত্র থাকলেও বর্তমানে তারা নির্বাচনকে ঘিরে প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে। সিনেটে অভিশংসন এড়াতে দুতার্তে ঘাঁটিকে কমপক্ষে ৯টি ভোট নিশ্চিত করতে হবে।

এই নির্বাচনে কিছু অপ্রত্যাশিত ফলও এসেছে। মারকোসের পছন্দের প্রার্থীরা পূর্বাভাস অনুযায়ী সাফল্য পাননি। কেবল টেলিভিশন উপস্থাপক আরউইন তুলফো শীর্ষ পাঁচে রয়েছেন। বাকি শীর্ষ পাঁচে রয়েছেন দুতার্তের দুই সহকারী ও দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী।

অন্যদিকে ভাইস-প্রেসিডেন্ট সারা দুতার্তে এখনো জনপ্রিয় এবং দক্ষিণ ফিলিপাইনে দুতার্তে পরিবারের ভোট ব্যাংক অটুট রয়েছে। এখন পর্যন্ত ফলাফল বলছে, তারা দাভাওসহ দক্ষিণাঞ্চলে নিজেদের প্রভাব ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।